গর্ভাবস্থায় মিষ্টি আলু খাওয়ার উপকারিতা
এক নজরে পুরো পোস্টের সূচিপত্র:
- গর্ভাবস্থায় মিষ্টি আলু খাওয়ার উপকারিতার সারসংক্ষেপ
- মিষ্টি আলুর স্বাস্থ্য উপকারিতা
- মিষ্টি আলু কিভাবে খাবেন
- সতর্কতা
- শেষ কথা
গর্ভাবস্থায় মিষ্টি আলু খাওয়ার উপকারিতার সারসংক্ষেপ
এমন ব্যক্তি খুঁজে পাওয়া কষ্টকর হবে যারা কখনো মিষ্টি আলু খায়নি। কিন্তু তারা হয়তো মিষ্টি আলু খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে জানেন না। আমরা অনেকে মিষ্টি আলু খেতে ভয় করি। কারন মনে করি মিষ্টি আলু হয়তো স্বাস্থ্যের জন্য অনেক ক্ষতিকর। কিন্তু আপনাদের জানা দরকার মিষ্টি আলু খাবার মধ্যে অনেক উপকার লুকিয়ে রয়েছে।আসুন জেনে নেওয়া যাক, গর্ভাবস্থায় মিষ্টি আলু খাওয়ার কিছু উপকারিতা।
- ফোলেট সমৃদ্ধ: মিষ্টি আলুতে প্রচুর পরিমাণে ফোলেট বা ফলিক অ্যাসিড থাকে, যা গর্ভাবস্থায় শিশুর মস্তিষ্ক এবং মেরুদণ্ডের উন্নতিতে সাহায্য করে। ফোলেটের অভাবে শিশুর নিউরাল টিউব ডিফেক্টের মতো গুরুতর সমস্যা হতে পারে। তাই গর্ভবতী মায়েদের জন্য ফোলেট অত্যন্ত জরুরি।
- ভিটামিন এ এর ভালো উৎস: মিষ্টি আলু বিটা-ক্যারোটিন সমৃদ্ধ, যা শরীরে গিয়ে ভিটামিন এ তে রূপান্তরিত হয়। ভিটামিন এ শিশুর দৃষ্টিশক্তি, ত্বক, এবং হাড়ের বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। তবে, গর্ভাবস্থায় ভিটামিন এ এর অতিরিক্ত সেবন এড়িয়ে চলা উচিত, কারণ এটি ক্ষতিকর
- . ফাইবার সমৃদ্ধ: গর্ভাবস্থায় কোষ্ঠকাঠিন্য একটি সাধারণ সমস্যা। মিষ্টি আলুতে প্রচুর পরিমাণে ডায়েটারি ফাইবার থাকে, যা হজমশক্তি বাড়াতে এবং কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে সহায়ক।
- পটাসিয়াম সমৃদ্ধ: মিষ্টি আলুতে পটাসিয়াম থাকে, যা গর্ভাবস্থায় রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে। পটাসিয়াম মাংসপেশীর কার্যক্রম এবং শরীরের পানি ও ইলেক্ট্রোলাইট ভারসাম্য রক্ষা করে।
- ভিটামিন সি এর উৎস: মিষ্টি আলুতে ভিটামিন সি থাকে, যা শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় এবং আয়রন শোষণে সহায়তা করে। গর্ভাবস্থায় আয়রন খুবই জরুরি, কারণ এটি রক্তস্বল্পতা রোধ করতে সাহায্য করে।
- কম ক্যালোরি, বেশি পুষ্টি: মিষ্টি আলু কম ক্যালোরি যুক্ত একটি খাবার, যা ওজন নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। এটি গ্লাইসেমিক ইনডেেক্স কম থাকে, ফলে রক্তে শর্করার স্তর নিয়ন্ত্রণে রাখে।
- দৃষ্টিশক্তি বাড়ায়:ভিটামিনে সমৃদ্ধ মিষ্টি আলু আমাদের চোখ ভালো রাখার ক্ষেত্রে ও সমান কার্যকারী।এই আলোতে থাকে বিটা ক্যারোটিন। এই উপাদান আমাদের চোখকে সূর্যের অতিবেগুনি আলোকরশ্মি থেকে রক্ষা করে। তাই দৃষ্টিশক্তি বাড়াতে নিয়মিত মিষ্টি আলু খেতে পারে।
মিষ্টি আলুর স্বাস্থ্য উপকারিতা
পুষ্টিবিদ ও বিশেষজ্ঞরা মিষ্টি আলুকে স্বাস্থ্যকর সবজি বলে উল্লেখ করেন। এটি প্রতিদিনের খাবারে যোগ করার কথাও বলেন। সেলিব্রেটি পুষ্টিবিদ রুজুতা দিবাকর বলেন, 'আশযুক্ত এই সবজি সবার জন্যই নিরাপদ, বিশেষ করে যারা স্থূলতা, পিসিওডি, ডায়াবেটিস ইত্যাদি সমস্যায় ভুগছেন, তারাও খেতে পারবেন। মিষ্টি আলু দিয়ে দ্রুত বিভিন্ন খাবারের পদ তৈরি করা যায়।' আমি জেনে নিন মিষ্টি আলোর কিছু চমৎকার উপকারিতা-
- রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়:শীতে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে পারে এমন খাবার খুজছেন? মিষ্টি আলু হতে পারে সহজ সমাধান। মিষ্টি আলুতে থাকা ক্যারোটিনয়েড এবং অ্যান্থোসায়ানিন নামক দুটি উপাদান আমাদের শরীরকে ফ্রি রেডিক্যালের হাত থেকে বাঁচায় এবং সেই সঙ্গে বাড়ায় রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা।
- ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখে:মিষ্টি স্বাদের বলে ডায়াবেটিস রোগীরা মিষ্টি আলু এড়িয়ে যাবেন, এমনটাই মনে হতে পারে।তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন ভিন্ন কথা। মিষ্টি আলুর গ্লাসেমিক ইনডেক্স কম থাকে এবং থাকে প্রচুর ফাইবার। এর স্টার্চি কার্বোহাইড্রেট রক্ত প্রবাহে সুগারের মাত্রাও ধীর করে দেয়। আমেরিকান ডায়াবেটিস সোসাইটির তথ্য অনুসারে, ‘ডায়াবেটিসের জন্য মিষ্টি আলু এক ধরনের সুপার ফুড। স্টার্চি এই সবজি ভিটামিন এ এবং ফাইবার সমৃদ্ধ। সেইসঙ্গে এতে আরও আছে ভিটামিন সি এবং পটাসিয়াম।’
- ওজন নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে:যারা ওজন কমাতে চাইছেন, তাদের জন্য উপকারী একটি খাবার হতে পারে মিষ্টি আলু। এই সবজিতে থাকে খুবই অল্প ক্যালোরি এবং প্রচুর ফাইবার। যে কারণে এটি দীর্ঘ সময় পেট ভরিয়ে রাখলেও ওজন বৃদ্ধির ভয় থাকে না। এটি নাস্তার পদ হিসেবে চমৎকার হতে পারে।
মিষ্টি আলু কিভাবে খাবেন
মিষ্টি আলু বিভিন্নভাবে রান্না করে খাওয়া যায়। এটি সিদ্ধ, বেকড, ভাজা বা ম্যাশ করে খাওয়া যায়। সকালের নাস্তা বা বিকেলের স্ন্যাকস হিসেবে এটি দারুণ উপকারী। মিষ্টি আলুর স্যুপ, সালাদ বা মিষ্টি আলুর পিউরি তৈরি করেও খাওয়া যায়।
মাইতানহিয়াত আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url