ত্বক ও চুলের সমস্যা সমাধানে প্রাকৃতিক পদ্ধতিতে নিমপাতার ব্যবহার

প্রিয় পাঠক, ত্বক ও চুলের সমস্যা সমাধানে প্রাকৃতিক পদ্ধতিতে নিমপাতার ব্যবহার আমাদের জন্যে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এই প্রাকৃতিক উপাদানটি ত্বকের ব্রণ, চুল পড়া, খুশকির মতো সমস্যার সমাধানে অত্যন্ত কার্যকর।

আজকের আর্টিকেলে ত্বক ও চুলের সমস্যা সমাধানে প্রাকৃতিক পদ্ধতিতে নিমপাতার ব্যবহার নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হবে।এখানে আমরা আরো জানবো নিম পাতা চুলে দেওয়ার নিয়ম, ব্রণের জন্য নিম পাতার ব্যবহার ইত্যাদি। চলুন, নিমপাতার জাদুকরী গুণাবলী সম্পর্কে আরও জানি।

পোষ্ট সূচিপত্রঃ  ত্বক ও চুলের সমস্যা সমাধানে প্রাকৃতিক পদ্ধতিতে নিমপাতার ব্যবহার

ত্বক ও চুলের সমস্যা সমাধানে প্রাকৃতিক পদ্ধতিতে নিমপাতার ব্যবহার আমরা প্রায় সবাই জানি, নিমপাতা চুলের স্বাস্থ্য রক্ষা ও চুলের সমস্যাগুলি সমাধানে সহায়ক। নিম পাতা চুলে ব্যবহারের কিছু কার্যকর পদ্ধতি রয়েছে যা নিচে বিস্তারিতভাবে বর্ণনা করা হলো:

প্রথমে তাজা নিম পাতা সংগ্রহ করুন। এক গ্লাস পানিতে নিম পাতা ফুটিয়ে নিন। পাতা নরম হয়ে গেলে, তা ঠান্ডা হতে দিন। পাতাগুলো ছেঁকে নিয়ে মিহি পেস্ট তৈরি করুন। এই পেস্ট সরাসরি মাথার ত্বকে ও চুলে লাগান। ৩০ মিনিট রেখে তারপর ঠান্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।

নিম পাতা দিয়ে তৈরি তেল চুলের যত্নে অত্যন্ত কার্যকর। এক কাপ নারকেল তেল গরম করে তাতে কিছু নিম পাতা যোগ করুন। পাতা গুলো কচকচে হয়ে যাওয়া পর্যন্ত গরম করুন। ঠান্ডা হয়ে গেলে তেলটি ছেঁকে নিয়ে সংরক্ষণ করুন। নিয়মিত মাথার ত্বকে ও চুলে এই তেল ম্যাসাজ করুন এবং এক ঘণ্টা পর শ্যাম্পু দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।


নিম পাতার রinse চুলের জন্য অত্যন্ত স্বাস্থ্যকর। এক গ্লাস পানিতে নিম পাতা ফুটিয়ে নিন। পানি সবুজ হয়ে গেলে নামিয়ে ঠান্ডা করুন। শ্যাম্পু করার পর চুলে এই নিম পানির rinse করুন। এটি চুলের খুশকি দূর করতে এবং চুলকে মসৃণ ও উজ্জ্বল করতে সহায়ক।
নিম পাতা, মেথি দানা ও টক দই মিশিয়ে একটি হেয়ার মাস্ক তৈরি করুন। নিম পাতা ও মেথি দানা একসাথে বেটে মিহি পেস্ট তৈরি করুন, তাতে টক দই মেশান। এই মিশ্রণটি চুলে লাগিয়ে ৪৫ মিনিট রেখে দিন। এরপর ঠান্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। এটি চুল পড়া রোধ করে এবং চুলের গোঁড়াকে মজবুত করে।

চুলের ত্বকে জমে থাকা ময়লা ও তৈলাক্ততা দূর করতে নিম পাতার স্ক্রাব অত্যন্ত কার্যকর। নিম পাতা ও বেকিং সোডা মিশিয়ে একটি স্ক্রাব তৈরি করুন। এই মিশ্রণটি মাথার ত্বকে আলতোভাবে ম্যাসাজ করুন এবং কিছুক্ষণ রেখে পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। এটি চুলের ত্বকের পোরস পরিষ্কার করে এবং স্বাস্থ্যকর চুলের বৃদ্ধি নিশ্চিত করে।

নিয়মিত এই পদ্ধতিগুলি অনুসরণ করলে চুলের স্বাস্থ্যের উন্নতি হবে এবং চুলের সমস্যাগুলি দূর হবে। নিম পাতা একটি প্রাকৃতিক উপাদান হিসেবে চুলের যত্নে অনন্য ভূমিকা পালন করে।

ব্রণের জন্য নিম পাতার ব্যবহার

ব্রণের সমস্যা একটি নাছোড়বান্দা সমস্যা। একবার দেখা দিলে সহজে যেতে চায় না। আপনি যদি ব্রণ নিয়ে সমস্যায় ভুগে থাকেন এবং অনেককিছু ব্যবহার করেও সুফল না পান, তবে এবার থেকে ব্রণের জন্য নিম পাতার ব্যবহার করতে পারেন। কারণ ত্বকের বিভিন্ন সমস্যা দূর করার কাজে নিমপাতা একাই একশো! ব্রণের দাগ থেকে শুরু করে চুলকানি - ত্বকের নানা সমস্যা দূর করতে এটি বেশ কার্যকরী। চলুন জেনে নেওয়া যাক ব্রণের জন্য নিম পাতার ব্যবহার:

 নিমপাতার প্যাকঃ প্রথমে একমুঠো পরিষ্কার নিমপাতা নিন। এরপর তা ভালো করে বেটে বা পেস্ট করে নিন। এবার সেই পেস্টের সঙ্গে সামান্য লেবুর রস ও অল্প গোলাপ জল মেশান। পেস্ট খুব বেশি পাতলা করবেন না। এবার সেই মিশ্রণ মুখে ভালো করে লাগিয়ে নিন। মুখের পাশাপাশি ঘাড়ে, বগলে, কনুইতেও লাগাতে পারেন। এভাবে রেখে দিন। শুকিয়ে গেলে ধুয়ে ফেলুন। এভাবে নিয়মিত ব্যবহার করলে দ্রুতই ব্রণের সমস্যা দূর হবে।

আরো পড়ুনঃ  গর্ভাবস্থায় বাচ্চার ওজন কত হওয়া উচিত ও বৃদ্ধির উপায়

 নিমপাতা ও অ্যালোভেরাঃ ত্বকের যত্নের জন্য অ্যালোভেরা খুবই উপকারী একটি উপাদান। এর সঙ্গে নিমপাতা মিশিয়ে ব্যবহার করলে আরও বেশি উপকার পাওয়া যায়। ব্রণ ও এর দাগছোপ দূর করার জন্য নিম পাতা শুকিয়ে গুঁড়া করে নিন। এবার সেই গুঁড়া অ্যালোভেরার পাতার ভেতরের জেলের সঙ্গে মিশিয়ে নিন। মিশ্রণটি মুখে লাগিয়ে ১০-১৫ মিনিট রেখে দিন। এরপর পরিষ্কার পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলুন। এরপরে সামান্য লেবু ও মধু মিশিয়ে তা মুখে মাখুন। পরে ভালো করে ধুয়ে নিন।

 নিমপাতা, চন্দন বা হলুদঃ ব্রণ দূর করার জন্য নিমপাতার সঙ্গে চন্দন মিশিয়েও একটি প্যাক তৈরি করতে পারেন। যাদের ঠান্ডা লাগার ভয় রয়েছে তারা চন্দনের বদলে হলুদ বাটাও মিশাতে পারেন এই প্যাক তৈরিতে। তবে ব্রণের সমস্যার ক্ষেত্রে চন্দনই বেশি কার্যকরী। এই দুই উপাদান মিশিয়ে নিন। এরপর সেই মিশ্রণ মুখে লাগিয়ে অপেক্ষা করুন মিনিট দশেক। এরপর মুখ পরিষ্কার পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। শুকনো তোয়ালে দিয়ে আলতো হাতে মুখ মুছে গোলাপজল লাগিয়ে নিন। এভাবে নিয়মিত ব্যবহার করলে উপকার পাবেন।

ব্রণের জন্য নিম পাতার ব্যবহার অত্যন্ত উপকারী। নিয়মিত ব্যবহারে ব্রণসহ বিভিন্ন ত্বকের সমস্যা দূর হবে এবং ত্বক থাকবে সুস্থ ও উজ্জ্বল।

চর্মরোগে নিম পাতার ব্যবহার

চর্মরোগ একটি মারাত্মক সমস্যা। যাদের এই রোগ হয়, তারা এর যন্ত্রণার প্রকৃত অভিজ্ঞতা জানে। বিশেষ করে বর্ষাকালে চর্মরোগের প্রকোপ বাড়ে, কারণ এই সময়ে আর্দ্রতা এবং আর্দ্রতার কারণে ত্বকে বিভিন্ন সমস্যা দেখা দেয়। তবে এই সমস্যার একটি প্রাকৃতিক ও কার্যকর সমাধান হলো নিম পাতা। নিম পাতার ব্যবহারে চর্মরোগ দ্রুত নিরাময় হয় এবং ত্বক সুস্থ থাকে।

বর্ষাকালে চর্মরোগ প্রতিরোধে কিছু পরামর্শঃ বর্ষাকালে চর্মরোগ থেকে বাঁচতে আপনাকে অবশ্যই পরিষ্কার এবং শুকনো জামাকাপড় পরিধান করতে হবে। হাত-পা ভিজতে দেওয়া যাবে না, কারণ অতিরিক্ত আর্দ্রতা চর্মরোগ, দাদ ও চুলকানির সমস্যা বাড়িয়ে তুলতে পারে। এই সময়ে নিম পাতার ব্যবহারে চর্মরোগ প্রতিরোধ করা যায়।

চর্মরোগে নিম পাতার প্রাচীন ওষুধি গুণঃ প্রাচীনকাল থেকেই নিম পাতা তার ঔষধি গুণের জন্য পরিচিত। নিম পাতায় প্রচুর ঔষধি গুণ রয়েছে যা ত্বকের বিভিন্ন সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে। চর্মরোগ দূর করতে নিম পাতা একটি কার্যকরী উপাদান হিসেবে ব্যবহৃত হয়।

নিম পাতা ব্যবহারের কিছু উপায়ঃ

  • ১. নিম পাতার পেস্ট: নিম পাতা ভালো করে ধুয়ে বেটে একটি মসৃণ পেস্ট তৈরি করুন। এই পেস্ট আক্রান্ত স্থানে লাগিয়ে ১৫-২০ মিনিট রেখে দিন এবং তারপর পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। এটি প্রতিদিন দুইবার ব্যবহার করলে চর্মরোগ দ্রুত নিরাময় হবে।
  • ২. নিম পাতার রস: তাজা নিম পাতা ব্লেন্ডারে পিষে রস বের করুন। এই রস আক্রান্ত স্থানে সরাসরি প্রয়োগ করুন। এটি দ্রুত শোষিত হয়ে ত্বককে শীতল করবে এবং চর্মরোগের সংক্রমণ কমাবে।
  • ৩. নিম তেল: নিম তেল ত্বকের গভীরে প্রবেশ করে ফাঙ্গাল এবং ব্যাকটেরিয়াল সংক্রমণ দূর করতে সাহায্য করে। আক্রান্ত স্থানে প্রতিদিন রাতে নিম তেল লাগিয়ে রাখুন এবং সকালে ধুয়ে ফেলুন।

নিম ছালের গুঁড়ো দিয়ে তৈরি পাউডারঃ প্রথমে নিম গাছের শুকনো ছাল তুলে গুঁড়ো করে নিতে হবে। এরপর ৩ গ্রাম পাউডার এবং এক গ্লাস পানি নিয়ে সেই শুকনো ছালের গুঁড়ো সারারাত ভিজিয়ে রাখতে হবে। সকালে সেই ভিজিয়ে রাখা পানিতে সামান্য পরিমাণ মধু মিশিয়ে পান করতে হবে। নিয়মিত এইভাবে ব্যবহার করলে চর্মরোগ অনেক উপশম পাবে।

নিম পাতার প্রাকৃতিক গুণাগুণ চর্মরোগের জন্য অত্যন্ত উপকারী। বর্ষাকালে চর্মরোগের প্রকোপ বাড়লেও নিয়মিত নিম পাতার ব্যবহারে এই সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব।

মুখে নিম পাতার ব্যবহার

আমাদের ত্বকের যত্ন নিতে আমরা অনেকেই বিভিন্ন উপায় অবলম্বন করি। কিন্তু ব্যস্ততার কারণে অনেকেই সঠিকভাবে ত্বকের যত্ন নিতে পারেন না। সারাদিনের পরিশ্রম, ধকল, এবং ধুলাবালিতে ত্বক তার লাবণ্য হারিয়ে নিষ্প্রাণ হয়ে যায়। তাই, ত্বককে সতেজ, সুস্থ, এবং প্রাণবন্ত রাখতে সঠিক পদ্ধতিতে যত্ন নেওয়া অত্যন্ত জরুরি।

আরো পড়ুনঃ খালি পেটে আদার রস পান করার উপকারিতা ও অপকারিতা

আমাদের শরীরের ত্বক এবং মুখের ত্বকের গঠন একেবারেই আলাদা। মুখের ত্বক অনেক বেশি নাজুক এবং কোমল। তাই, শরীরের ত্বক বিভিন্ন রকমের সাবান সহ্য করতে পারলেও মুখের ত্বক তা একদমই পারে না। সাবানের ব্যবহারে ত্বকের ময়েশ্চার চলে গিয়ে ত্বক হয়ে যায় শুষ্ক। এছাড়াও ত্বকের পিএইচ স্তর একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়, যা সাবান ব্যবহারের কারণে পরিবর্তিত হয়।

অনেক আগে থেকেই নিম এবং হলুদের বহুল ব্যবহার দেখা যায়। ঔষধি গাছ হিসেবে নিমের ব্যবহার হয়ে আসছে প্রায় পাঁচ হাজার বছর আগে থেকে। ভাইরাস এবং ব্যাকটেরিয়ানাশক হিসেবে এটি অত্যন্ত কার্যকর। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতেও এর জুড়ি মেলা ভার। তাই, ত্বকের যত্নে নিম পাতার ব্যবহার করতে পারেন।

নিম পাতা দিয়ে রূপচর্চা

রূপচর্চার রুটিনে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ উপাদানটি হলো ‘নিম’। স্বাস্থ্যগত গুণাগুণের পাশাপাশি নিম ত্বক এবং চুলের যত্নে অপরিহার্য। ব্রণ, ব্ল্যাকহেড, বলিরেখা, খুশকি, কিংবা চুল পড়ার সমস্যাতেও নিম অত্যন্ত কার্যকরী। চলুন জেনে নিই নিমের অসাধারণ উপকারিতাগুলো:

ত্বকের ইনফেকশন দূর করেঃ নিম পাতায় অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল, অ্যান্টিফাংগাল এবং অ্যান্টিভাইরাল উপাদান থাকার কারণে এটি ত্বকের ইনফেকশন সারাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। কয়েকটি নিম পাতা নরম হওয়া পর্যন্ত সেদ্ধ করে সেই পানি গোসলের পানির সাথে মিশিয়ে ফেলুন। প্রতিদিন এই পানিতে গোসল করলে ত্বকের ইনফেকশন ধীরে ধীরে সেরে যাবে।

ব্রণ দূর করেঃ ত্বকের সিবাকাস গ্রন্থিতে অতিরিক্ত তেল, ময়লা এবং ব্যাকটেরিয়া থেকে ব্রণের সৃষ্টি হয়। নিমপাতা এই সমস্যাগুলো দূর করতে সহায়ক। নিমপাতা সেদ্ধ করে সেই পানিতে একটি তুলার বল ডুবিয়ে পুরো মুখ মুছে ফেলুন। মুখের অতিরিক্ত তৈলাক্তভাব কমাতে শশা-নিমের ফেসপ্যাক অথবা নিম-টক দইয়ের প্যাক ব্যবহার করতে পারেন।

টোনার হিসেবে ব্যবহারঃ নিমপাতার পানি ত্বকের বলিরেখা এবং মুখের দাগ দূর করতে কার্যকরী। এটি মুখের কালচে ভাব কমায় এবং ত্বককে সুন্দর করে তোলে। নিমপাতা সেদ্ধ করে পানি ছেঁকে ঠাণ্ডা হতে দিন। প্রতিরাতে মুখে লাগিয়ে পরের দিন সকালে ধুয়ে ফেলুন। তৈলাক্ত ত্বকের জন্য এর সাথে গোলাপ জল মেশাতে পারেন।

শুষ্ক ত্বকের যত্নেঃ নিম ত্বককে নরম ও কোমল করে এবং ত্বকের শুষ্কতা দূর করে। অল্প পরিমাণ নিমপাতার গুঁড়ো নিয়ে এতে কয়েক ফোঁটা জলপাই তেল মেশান। এই মিশ্রণটি মুখে লাগিয়ে কিছুক্ষণ রাখুন এবং ঠাণ্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। সপ্তাহে একদিন বা দু’দিন এই ফেসপ্যাক ব্যবহার করুন।

ব্ল্যাকহেড এবং মুখের গর্ত কমাতেঃ নিম ব্ল্যাকহেড, হোয়াইটহেড এবং বড় রোমকূপের সমস্যা সমাধানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। নিমপাতার গুঁড়োর সাথে কমলালেবুর খোসার গুঁড়ো মিশিয়ে একটি মিশ্রণ তৈরি করুন। এতে অল্প মধু, দুধ, এবং টক দই মেশান। সপ্তাহে অন্তত তিনবার ব্যবহার করলে ভালো ফলাফল পাবেন। শুধুমাত্র ব্ল্যাকহেডের সমস্যা থাকলে আক্রান্ত স্থানে নিম তেল মালিশ করুন।

নিম পাতার তেল তৈরির পদ্ধতি

ত্বক ও চুলের সমস্যা সমাধানে প্রাকৃতিক পদ্ধতিতে নিমপাতার ব্যবহার করার আরেকটি পদ্ধতি হল নিমপাতার তেল। ছোটবেলা থেকেই নিম গাছ দেখে আসছি, কিন্তু এর সাথে সম্পর্কিত অনেক বিষয় রয়েছে যা আমরা এখনও সঠিকভাবে জানি না। এর মধ্যে একটি হল এটি থেকে তৈরি তেল সম্পর্কেঃ

নিম পাতা সংগ্রহ: প্রথমে তাজা নিম পাতা সংগ্রহ করুন। ১ কাপ পরিমাণ পাতা নিন।

পরিষ্কার করা: পাতাগুলো ভালভাবে ধুয়ে নিন যাতে ধুলা বা ময়লা চলে যায়।শুকানো: পাতাগুলো একটি পরিষ্কার কাপড়ে ছড়িয়ে দিন এবং সঠিকভাবে শুকিয়ে নিন।

কাটার: শুকানো পাতাগুলো ছোট ছোট টুকরো করে কেটে নিন।

তেল প্রস্তুতি: একটি পরিষ্কার পাত্রে ১ কাপ তেল (নারকেল বা সরিষার তেল) গরম করুন।

পাতা যোগ করা: গরম তেলে কাটা নিম পাতাগুলো দিন।

রান্না করা: পাতাগুলো তেলের সাথে মিশিয়ে কম তাপে ১৫-২০ মিনিট রান্না করুন।

মিশ্রণ: পাতাগুলো তেলের সাথে ভালভাবে মিশবে এবং কিছুটা শুকিয়ে আসবে।

ফিল্টার করা: তেলটি ঠান্ডা হতে দিন। পরে একটি ছাঁকনি দিয়ে ফিল্টার করুন।

সংরক্ষণ: ফিল্টার করা তেল একটি পরিষ্কার কাঁচের বোতলে রাখুন।

লেবেল লাগানো: বোতলের গায়ে তেলের প্রস্তুতির তারিখ লিখুন।

স্টোরেজ: তেলটি শীতল ও অন্ধকার স্থানে সংরক্ষণ করুন।ব্যবহার: স্কিনকেয়ার বা হেয়ারকেয়ার হিসেবে ব্যবহারের আগে তেলটি চেক করুন।

চুলের জন্য: মাথার ত্বক ও চুলে ব্যবহার করলে এটি চুলের স্বাস্থ্য বৃদ্ধি করে।

ত্বকের জন্য: ত্বকে ব্যবহার করলে এটি ত্বকের সমস্যা সমাধানে সাহায্য করবে।

    চুলকানিতে নিম পাতার ব্যবহার

    চুলকানি একটি অত্যন্ত বিরক্তিকর ও অস্বস্তিকর সমস্যা, যা প্রায়ই অস্বাস্থ্যকর পরিস্থিতি এবং চর্মরোগের কারণে হয়। আমাদের চারপাশে প্রচুর প্রাকৃতিক উপাদান রয়েছে, যেগুলি এই সমস্যা সমাধানে সহায়ক হতে পারে। এমনই একটি উপাদান হলো নিম পাতা। নিম পাতা শতাব্দী ধরে বিভিন্ন স্বাস্থ্য সমস্যা সমাধানে ব্যবহৃত হয়ে আসছে এবং এর মধ্যে চুলকানি নিরাময়েও এটি খুবই কার্যকর।নিম পাতার ব্যবহার চুলকানি নিরাময়ে বিভিন্নভাবে করা যায়। সরাসরি নিম পাতা চুলকানির স্থানে প্রয়োগ করা যেতে পারে, এছাড়াও নিম পাতার রস, তেল বা নিম পাতার গুঁড়া ব্যবহার করেও সমানভাবে উপকার পাওয়া যায়।

    প্রথমত, কয়েকটি তাজা নিম পাতা নিয়ে সেগুলি ভালো করে ধুয়ে নিতে হবে। এরপর পেস্ট তৈরি করতে হবে এবং তা চুলকানির স্থানে প্রয়োগ করতে হবে। কিছুক্ষণ পর ঠাণ্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলতে হবে। নিয়মিত এই প্রক্রিয়া অনুসরণ করলে চুলকানি দ্রুত নিরাময় হবে।

    দ্বিতীয়ত, নিম পাতার রস ব্যবহার করা যেতে পারে। কিছু তাজা নিম পাতা পানিতে সেদ্ধ করে সেই পানি ঠাণ্ডা করে চুলকানির স্থানে প্রয়োগ করা যেতে পারে। এই নিম পাতার পানি দিনে একাধিকবার ব্যবহার করা যায়।

    নিম তেলের ব্যবহারও চুলকানি নিরাময়ে বেশ কার্যকর। নিম তেল চুলকানির স্থানে সরাসরি প্রয়োগ করতে হবে। নিম তেলের অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল ও অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি গুণাগুণ চুলকানি কমাতে সাহায্য করে।

    সবশেষে, নিম পাতার গুঁড়া চুলকানির স্থানে প্রয়োগ করা যেতে পারে। নিম পাতার গুঁড়া ও পানি মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করে তা চুলকানির স্থানে প্রয়োগ করতে হবে। এটি নিয়মিত ব্যবহারে চুলকানি দ্রুত নিরাময় হবে।

    অতএব, নিম পাতা প্রাকৃতিক ও কার্যকরী একটি সমাধান যা চুলকানি নিরাময়ে সহায়ক। এটি সহজলভ্য ও প্রায় কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নেই। নিয়মিত ব্যবহারে নিম পাতা চুলকানির সমস্যা দূর করে ত্বককে সুস্থ ও সুন্দর রাখতে পারে।

    লেখকের শেষকথা- ত্বক ও চুলের সমস্যা সমাধানে প্রাকৃতিক পদ্ধতিতে নিমপাতার ব্যবহার

    প্রিয় পাঠক, নিম পাতা প্রকৃতির এক অসাধারণ উপহার, যা শতাব্দী ধরে মানুষের উপকারে আসছে। ত্বক ও চুলের সমস্যা সমাধানে প্রাকৃতিক পদ্ধতিতে নিমপাতার ব্যবহার অতি প্রাচীনকাল থেকেই চলে আসছে।  আর্টিকেলটি পড়ে যদি আপনি উপকৃত হয়ে থাকেন তাহলে ত্বক ও চুলের সমস্যা সমাধানে প্রাকৃতিক পদ্ধতিতে নিমপাতার ব্যবহার এই আর্টিকেলটি আপনার সব বন্ধুদের পড়তে অনুরধ করবেন। 

    ত্বক ও চুলের সমস্যা সমাধানে প্রাকৃতিক পদ্ধতিতে নিমপাতার ব্যবহার আর্টিকেলটি পেতে আমাদের ওয়েবসাইট নিয়মিত ভিজিট করুন।এই আর্টিকেলটি পড়ে যদি আপনার কোনো মতামত জানানোর থাকে তাহলে অবশ্যই কমেন্ট করে সেটা জানিয়ে যাবেন।

                                                        { ধন্যবাদ। আসসালামু আলাইকুম }




    এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

    পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
    এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
    মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

    মাইতানহিয়াত আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

    comment url