গর্ভাবস্থায় বাচ্চার ওজন চার্ট - গর্ভাবস্থায় ৯ মাসের বাচ্চার ওজন
তাছাড়া আপনারা এই আর্টিকেলে আরো জানতে পারবেন গর্ভাবস্থায় বাচ্চার ওজন বৃদ্ধির উপায় এবংগর্ভাবস্থায় মায়ের ওজন বৃদ্ধির উপায় সম্পর্কে। আমি আশা করি আপনারা এই আর্টিকেলটি খুব মনোযোগ দিয়ে পড়বেন।
পোস্ট সূচিপত্রঃ গর্ভাবস্থায় বাচ্চার ওজন চার্ট
- গর্ভাবস্থায় বাচ্চার ওজন চার্ট
- গর্ভাবস্থায় বাচ্চার ওজন বৃদ্ধির উপায়
- গর্ভাবস্থায় মায়ের ওজন কত হওয়া উচিত
- ৩ মাসের বাচ্চার ওজন
- ৫ মাসের বাচ্চার ওজন
- ৭ মাসের বাচ্চার ওজন
- ৮ মাসের বাচ্চার ওজন
- ৯ মাসের বাচ্চার ওজন
- গর্ভাবস্থায় মায়ের খাদ্য তালিকা
- শেষ কথাঃ গর্ভাবস্থায় বাচ্চার ওজন চার্ট - গর্ভাবস্থায় ৯ মাসের বাচ্চার ওজন
গর্ভাবস্থায় বাচ্চার ওজন চার্ট
গর্ভাবস্থায় বাচ্চার ওজন চার্ট একটি গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশিকা যা গর্ভের শিশুর
স্বাভাবিক বৃদ্ধি এবং উন্নতির ধারণা দেয়। গর্ভাবস্থার ২০ সপ্তাহ পর থেকে শিশুর
ওজন দ্রুত বৃদ্ধি পেতে থাকে। সাধারণত, ২০ সপ্তাহের সময় শিশুর ওজন প্রায় ৩০০
গ্রাম হতে পারে।
এরপর থেকে প্রতি দুই সপ্তাহ পরপর ওজন বৃদ্ধি পায়, যেমন ২৪ সপ্তাহে ৬০০ গ্রাম এবং
৩২ সপ্তাহে ১৭০০ গ্রাম। গর্ভাবস্থার শেষ দিকে, অর্থাৎ ৪০ সপ্তাহে, শিশুর ওজন
প্রায় ৩৩০০ গ্রাম হতে পারে। তবে, শিশুর প্রকৃত ওজন ভ্রূণের বিকাশ, জেনেটিক্স,
এবং মাতৃস্বাস্থ্যের উপর নির্ভর করে পরিবর্তিত হতে পারে।
নিয়মিত আল্ট্রাসাউন্ড পরীক্ষার মাধ্যমে শিশুর স্বাস্থ্য এবং ওজন সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া জরুরি। চলুন তাহলে জেনে নেয়া যাক গর্ভাবস্থায় বাচ্চার ওজন চার্ট আসলে কেমন হয়।
বাচ্চার বয়স | উচ্চতা | ওজন |
---|---|---|
৮ সপ্তাহ | ১.৫ সেন্টিমিটার | ১ গ্রাম |
৯ সপ্তাহ | ২.২ সেন্টিমিটার | ২ গ্রাম |
১০ সপ্তাহ | ৩ সেন্টিমিটার | ৩.৯ গ্রাম |
১১ সপ্তাহ | ৪.২ সেন্টিমিটার | ৬.১০ গ্রাম |
১২ সপ্তাহ | ৫ সেন্টিমিটার | ১৩.৯ গ্রাম |
১৩ সপ্তাহ | ৭.২ সেন্টিমিটার | ২৩.২ গ্রাম |
১৪ সপ্তাহ | ৮.৬ সেন্টিমিটার | ৪২.১০ গ্রাম |
১৫ সপ্তাহ | ১০.৩ সেন্টিমিটার | ৭০.৪ গ্রাম |
১৬ সপ্তাহ | ১১.৭ সেন্টিমিটার | ১০০ গ্রাম |
১৭ সপ্তাহ | ১৩.৩ সেন্টিমিটার | ১৩৯ গ্রাম |
১৮ সপ্তাহ | ১৪.৫ সেন্টিমিটার | ১৯৫ গ্রাম |
১৯ সপ্তাহ | ১৫.৯ সেন্টিমিটার | ২৩৯.৪ গ্রাম |
২০ সপ্তাহ | ১৬.৯ সেন্টিমিটার | ৩০০ গ্রাম |
২১ সপ্তাহ | ২৬.৯ সেন্টিমিটার | ৩৬২ গ্রাম |
২২ সপ্তাহ | ২৮ সেন্টিমিটার | ৪৪০ গ্রাম |
২৩ সপ্তাহ | ২৯ সেন্টিমিটার | ৫০০ গ্রাম |
২৪ সপ্তাহ | ৩০.২ সেন্টিমিটার | ৬০০ গ্রাম |
২৫ সপ্তাহ | ৩৪.৯ সেন্টিমিটার | ৬৭০ গ্রাম |
২৬ সপ্তাহ | ৩৬.২ সেন্টিমিটার | ৭৫০ গ্রাম |
২৭ সপ্তাহ | ৩৬.৯ সেন্টিমিটার | ৮৭০ গ্রাম |
২৮ সপ্তাহ | ৩৭.৯ সেন্টিমিটার | ১০১০ গ্রাম |
২৯ সপ্তাহ | ৩৮.৭ সেন্টিমিটার | ১১৫০ গ্রাম |
৩০ সপ্তাহ | ৪০ সেন্টিমিটার | ১৩০০ গ্রাম |
৩১ সপ্তাহ | ৪১ সেন্টিমিটার | ১৫০০ গ্রাম |
৩২ সপ্তাহ | ৪২ সেন্টিমিটার | ১৭০০ গ্রাম |
৩৩ সপ্তাহ | ৪৩ সেন্টিমিটার | ১৯০০ গ্রাম |
৩৪ সপ্তাহ | ৪৫ সেন্টিমিটার | ২১০০ গ্রাম |
৩৫ সপ্তাহ | ৪৬ সেন্টিমিটার | ২৩০০ গ্রাম |
৩৬ সপ্তাহ | ৪৭ সেন্টিমিটার | ২৬০০ গ্রাম |
৩৭ সপ্তাহ | ৪৮ সেন্টিমিটার | ২৮০০ গ্রাম |
৩৮ সপ্তাহ | ৪৯ সেন্টিমিটার | ৩০০০ গ্রাম |
৩৯ সপ্তাহ | ৫০ সেন্টিমিটার | ৩২০০ গ্রাম |
৪০ সপ্তাহ | ৫১ সেন্টিমিটার | ৩৪০০ গ্রাম |
৪১ সপ্তাহ | ৫১.৭ সেন্টিমিটার | ৩৬০০ গ্রাম |
৪২ সপ্তাহ | ৫২.৫সেন্টিমিটার | ৩৭০০ গ্রাম |
গর্ভাবস্থায় বাচ্চার ওজন বৃদ্ধির উপায়
গর্ভাবস্থায়, আপনার শিশুর বৃদ্ধি এবং বিকাশে সহায়তা করার জন্য আপনি পর্যাপ্ত পরিমাণে ওজন বাড়াচ্ছেন তা নিশ্চিত করা গুরুত্বপূর্ণ।গর্ভাবস্থায় বাচ্চার ওজন বৃদ্ধির জন্য মায়েদের বিশেষ যত্ন নেওয়া প্রয়োজন। সঠিক পুষ্টি ও স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন বাচ্চার স্বাস্থ্য ও বৃদ্ধির জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। নিচে কিছু উপায় দেওয়া হলো যা গর্ভাবস্থায় বাচ্চার ওজন বৃদ্ধিতে সহায়ক হতে পারেঃ
- সুষম খাদ্য গ্রহনঃগর্ভাবস্থায় সুষম খাদ্য গ্রহণ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। প্রোটিন, কার্বোহাইড্রেট, এবং ফ্যাট সমৃদ্ধ খাবার যেমন দুধ, ডিম, মাংস, মাছ, সবজি, এবং ফল খাওয়া উচিত। এ ধরনের খাবার বাচ্চার সঠিক বৃদ্ধি ও স্বাস্থ্যের জন্য প্রয়োজনীয় পুষ্টি সরবরাহ করে। মায়েদের স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস বজায় রাখতে হবে।
- পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি পানঃগর্ভাবস্থায় পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি পান করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। দিনে অন্তত ৮-১০ গ্লাস পানি পান করলে শরীরের জলীয় পদার্থের অভাব মেটানো যায় এবং বাচ্চার সঠিক বৃদ্ধি নিশ্চিত হয়। পানি শরীরের বর্জ্য বের করে দেয় এবং ডিহাইড্রেশন এড়াতে সাহায্য করে। পর্যাপ্ত পানি পান গর্ভাবস্থার স্বাস্থ্যের জন্য সহায়ক।
- ভিটামিন ও মিনারেল সাপ্লিমেন্টঃগর্ভাবস্থায় ভিটামিন ও মিনারেল সাপ্লিমেন্ট গ্রহণ করা অপরিহার্য। বিশেষ করে, ফলিক এসিড, আয়রন, এবং ক্যালসিয়াম সাপ্লিমেন্ট বাচ্চার সঠিক বৃদ্ধি ও মায়ের স্বাস্থ্য বজায় রাখতে সহায়ক। ডাক্তারীর পরামর্শ অনুযায়ী সঠিক পরিমাণে সাপ্লিমেন্ট গ্রহণ করলে পুষ্টির ঘাটতি পূরণ হয়। সাপ্লিমেন্ট মায়ের ও বাচ্চার সুস্থতা নিশ্চিত করে।
- নিয়মিত চেকআপঃগর্ভাবস্থায় নিয়মিত চেক-আপ করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ডাক্তারি পরামর্শ অনুযায়ী আলট্রাসাউন্ড এবং অন্যান্য পরীক্ষা বাচ্চার ওজন ও স্বাস্থ্যের পর্যবেক্ষণ করতে সহায়ক। এই চেক-আপগুলি গর্ভাবস্থার সমস্যাগুলি সময়মতো শনাক্ত করতে এবং যথাযথ ব্যবস্থা নিতে সাহায্য করে। নিয়মিত চেক-আপ গর্ভাবস্থার সুস্থতা নিশ্চিত করে।
- পর্যাপ্ত বিশ্রামঃগর্ভাবস্থায় পর্যাপ্ত বিশ্রাম অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। পর্যাপ্ত ঘুম এবং বিশ্রাম মায়ের শরীরের শক্তি পুনরুদ্ধার করতে সহায়ক এবং মানসিক চাপ কমাতে সাহায্য করে। এটি বাচ্চার সঠিক বৃদ্ধি ও স্বাস্থ্য বজায় রাখতে সহায়ক। গর্ভবতী মায়েরা নিয়মিত বিশ্রাম নিলে সার্বিক সুস্থতা বৃদ্ধি পায়।
- সঠিক ওজন বজায় রাখাঃগর্ভাবস্থায় সঠিক ওজন বজায় রাখা গুরুত্বপূর্ণ। অতিরিক্ত ওজন বৃদ্ধির ফলে গর্ভাবস্থায় নানা সমস্যা সৃষ্টি হতে পারে। স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস ও নিয়মিত ব্যায়াম করে সঠিক ওজন বজায় রাখা উচিত। এটি মা ও বাচ্চার সুস্থতা নিশ্চিত করতে সহায়ক।
- প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবারঃগর্ভাবস্থায় প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার খাওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। প্রোটিন বাচ্চার সঠিক বৃদ্ধি ও উন্নত হাড়ের গঠন নিশ্চিত করতে সাহায্য করে। ডাল, মাংস, মাছ, ডিম, এবং দুধ প্রোটিনের ভালো উৎস। দৈনিক পর্যাপ্ত প্রোটিন গ্রহণ গর্ভাবস্থার স্বাস্থ্যের জন্য অপরিহার্য।
গর্ভাবস্থায় মায়ের ওজন কত হওয়া উচিত
গর্ভাবস্থায় একজন মায়ের ওজন সাধারণত ১১ থেকে ১৫ কেজি পর্যন্ত বৃদ্ধি পাওয়া স্বাভাবিক। তবে, এই ওজন বৃদ্ধি ব্যক্তির অনুযায়ী পরিবর্তিত হতে পারে, যা গর্ভধারণের আগে মায়ের ওজনের ওপর নির্ভর করে।
বডি মাস ইনডেক্স (বিএমআই) উচ্চতা এবং ওজনের অনুপাত হিসেবে নির্ধারিত হয়। একজন প্রাপ্তবয়স্কের আদর্শ বিএমআই হলো ১৮.৫ থেকে ২৪.৯। যাঁদের বিএমআই ১৯-এর কম, তাদের ক্ষেত্রে গর্ভাবস্থায় ১৭ কেজি পর্যন্ত ওজন বৃদ্ধি হওয়া স্বাভাবিক হতে পারে। অন্যদিকে, যাঁদের বিএমআই ২৫-এর বেশি, তাদের ক্ষেত্রে ৭ কেজি ওজন বৃদ্ধি যথেষ্ট মনে করা হয়।
গর্ভকালীন ৯ মাসকে তিনটি ত্রৈমাসিকে ভাগ করে ওজন বৃদ্ধির আদর্শ মাত্রা নিম্নরূপ:
-
প্রথম ত্রৈমাসিক: এই সময়ে সাধারণভাবে মায়ের ওজন বৃদ্ধি ০.৫ থেকে ২.৫ কেজি হতে পারে। এই সময়ে প্রধানত মায়ের শরীর গর্ভাবস্থার জন্য প্রস্তুত হচ্ছে এবং প্রাথমিক স্তরের পরিবর্তনগুলি ঘটছে।
-
দ্বিতীয় ত্রৈমাসিক: এই পর্যায়ে, প্রতি সপ্তাহে ৫০০ গ্রাম থেকে ১ কেজি পর্যন্ত ওজন বৃদ্ধি সাধারণ। শিশুর বৃদ্ধি দ্রুত হওয়ার সাথে সাথে মায়ের শরীরও আরও বেশি পরিবর্তন হতে শুরু করে।
-
তৃতীয় ত্রৈমাসিক: এই সময়ে, প্রতি সপ্তাহে ১৫০ গ্রাম থেকে ১ কেজি পর্যন্ত ওজন বৃদ্ধি স্বাভাবিক। শিশুর হাড় এবং অন্যান্য অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ গঠিত হচ্ছে এবং শরীর প্রস্তুত হচ্ছে প্রসবের জন্য।
অতিরিক্ত ওজন বৃদ্ধির ফলে গর্ভকালীন ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, প্রি-ইক্ল্যাম্পসিয়া এবং প্রিম্যাচিউর প্রসবের ঝুঁকি বাড়তে পারে। এছাড়াও, অতিরিক্ত ওজন প্রসবের সময় এবং প্রসব-পরবর্তী অন্যান্য জটিলতা সৃষ্টি করতে পারে। অপরদিকে, কাঙ্ক্ষিত মাত্রার চেয়ে কম ওজন বৃদ্ধির ফলে গর্ভের শিশুর ওজন কম এবং আকারে ছোট হতে পারে, যা নির্ধারিত সময়ের আগেই প্রসবের কারণ হতে পারে এবং শিশুর জন্মগত ত্রুটির ঝুঁকি বাড়াতে পারে।
এছাড়া, গর্ভকালীন স্বাস্থ্য সঠিকভাবে বজায় রাখতে ওজন বৃদ্ধির এই আদর্শ মাত্রাগুলি মেনে চলা গুরুত্বপূর্ণ। স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস এবং নিয়মিত চেক-আপের মাধ্যমে গর্ভকালীন ওজন বৃদ্ধির সঠিক মাত্রা নিশ্চিত করা সম্ভব।
৩ মাসের বাচ্চার ওজন
গর্ভাবস্থায় ৩ মাস বয়সী একটি বাচ্চার ওজন কত হবে সে সম্পর্কে সকল মায়েরা জানতে চাই। সাধারণত, এই বয়সে একটি শিশুর ওজন ৫ থেকে ৭ কিলোগ্রামের মধ্যে থাকতে পারে, তবে এটি শিশুর জেনেটিক্স, জন্মের সময়ের ওজন, এবং খাদ্যাভ্যাসের উপর নির্ভর করে পরিবর্তিত হতে পারে।
এ সময়ে, শিশুর ওজন নিয়মিতভাবে বৃদ্ধি পাওয়া উচিত, যা তার সুস্থতার লক্ষণ। বাচ্চা যদি মায়ের বুকের দুধ পান করে, তবে প্রতিবার খাওয়ানোর পর তার ওজন বাড়ছে কিনা তা লক্ষ্য করা জরুরি। মায়ের বুকের দুধ বা ফর্মুলা দুধের মাধ্যমে শিশুর প্রয়োজনীয় পুষ্টি নিশ্চিত করতে হবে।
যদি ৩ মাসের বাচ্চার ওজন বৃদ্ধি না পায় বা স্বাভাবিকের চেয়ে কম হয়, তাহলে অবশ্যই শিশু বিশেষজ্ঞের সাথে পরামর্শ করা উচিত। ওজন বৃদ্ধি শিশুর সমগ্র শারীরিক এবং মানসিক বিকাশের উপর প্রভাব ফেলে, তাই এটি নজরে রাখা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। শিশুর ওজন বৃদ্ধির পাশাপাশি তার সার্বিক বিকাশ, যেমন নড়াচড়া, হাসি, এবং অন্যদের সাথে যোগাযোগের ক্ষমতা পর্যবেক্ষণ করতে হবে।
৫ মাসের বাচ্চার ওজন
৫ মাসের বাচ্চার ওজন কত হবে সে সম্পর্কে সব মায়েরাই নির্দিষ্ট একটি ধারণা পেতে চাই। সাধারণত, ৫ মাস বয়সে একটি শিশুর ওজন ৬ থেকে ৮ কিলোগ্রামের মধ্যে থাকতে পারে। তবে এটি শিশুর জেনেটিক্স, জন্মের সময়ের ওজন, এবং প্রতিদিনের পুষ্টি গ্রহণের উপর নির্ভর করে ভিন্ন হতে পারে।
এই সময়ে শিশুর ওজনের পাশাপাশি তার দৈনন্দিন ক্রিয়াকলাপ, যেমন হাসি, বসার চেষ্টা, এবং খেলনার প্রতি আগ্রহও বাড়তে থাকে। এটি তার শারীরিক ও মানসিক বিকাশের লক্ষণ। ৫ মাস বয়সী শিশুদের অনেকেই মায়ের বুকের দুধ বা ফর্মুলা দুধের পাশাপাশি সামান্য শক্ত খাবার খেতে শুরু করে, যা তাদের ওজন বৃদ্ধিতে সহায়তা করে।
যদি কোনো কারণে ৫ মাসের বাচ্চার ওজন কম বা বৃদ্ধি না পায়, তাহলে অবশ্যই শিশু ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া উচিত। সঠিক পুষ্টি নিশ্চিত করা শিশুর স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। প্রতিমাসে শিশুর ওজন মাপা এবং তার অন্যান্য বিকাশের দিকগুলো পর্যবেক্ষণ করা প্রয়োজন, যেন সময়মতো সঠিক পদক্ষেপ নেওয়া যায়।
৭ মাসের বাচ্চার ওজন
৭ মাসের বাচ্চার ওজন কত হবে সে সম্পর্কে সব মায়েরাই নির্দিষ্ট একটি ধারণা পেতে চাই। এই সময়ে, একটি শিশুর ওজন সাধারণত ৭ থেকে ৯ কিলোগ্রামের মধ্যে হতে পারে। তবে, এটি শিশুর জেনেটিক্স, জন্মের সময় ওজন, এবং খাবারের পরিমাণের উপর নির্ভর করে ভিন্ন হতে পারে।
৭ মাসের বয়সে শিশুর ওজন বৃদ্ধি দ্রুতগতিতে চলতে থাকে কারণ সে নতুন ধরনের খাবার গ্রহণ শুরু করে। মায়ের বুকের দুধ বা ফর্মুলা দুধের পাশাপাশি এ সময় বাচ্চাকে নরম খাবার খাওয়ানোর পরামর্শ দেওয়া হয়, যা তার পুষ্টির চাহিদা পূরণে সাহায্য করে।
আরো পড়ুনঃ ছেলেদের চুলের খুশকি দূর করার উপায় গুলো জেনে নিন
বাচ্চার ওজন ছাড়াও, তার অন্যান্য বিকাশ যেমন নড়াচড়া, বসতে শেখা, এবং চারপাশের পরিবেশে দেখানো খুব জরুরী। ওজন যদি স্বাভাবিকের চেয়ে কম হয়, তাহলে অবশ্যই শিশু ডাক্তারকে পরামর্শ করা উচিত।
৮ মাসের বাচ্চার ওজন
৮ মাসের বাচ্চার ওজন তার স্বাস্থ্যের একটি গুরুত্বপূর্ণ সূচক। এই বয়সে সাধারণত বাচ্চার ওজন প্রায় ১০ কিলোগ্রামের উপরে হতে হবে। তবে এটি শিশুর জন্মের সময় কত ওজন ছিল, খাদ্যাভ্যাস এবং জেনেটিক্সের উপর নির্ভর করে কিছুটা পরিবর্তিত হতে পারে।
এই সময়ে শিশুটি নিজে বসতে, হামাগুড়ি দিতে এবং ছোটখাটো জিনিস ধরতে শেখে, যা তার শারীরিক বিকাশের প্রমাণ। ওজন বৃদ্ধির পাশাপাশি, শিশুর প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় সঠিক পুষ্টির সরবরাহ নিশ্চিত করা জরুরি। এ সময়ে শিশুর খাবারের মধ্যে পুষ্টিকর ফল, সবজি, এবং অন্যান্য খাদ্য অন্তর্ভুক্ত করা উচিত।
আরো পড়ুনঃ হজম শক্তি বৃদ্ধি করতে ঘরোয়া টোটকা গুলো জেনে নিন
একজন ৮ মাস বয়সী শিশুর দৈনিক প্রয়োজনীয় ক্যালরি প্রায় ৬৮৭.৪ কিলোক্যালরি। তার প্রয়োজনীয় পুষ্টি উপাদানগুলোর মধ্যে বুকের দুধ বা ফর্মুলা দুধ, প্রোটিন, ফল, শাকসবজি, এবং শস্য দানা রয়েছে। শিশুটি দিনে ২ থেকে ৩ বার প্রধান খাবার খায়, এবং প্রতিবার প্রায় ১২৫ মিলি পরিমাণ খাবার গ্রহণ করে। এই সময় তার জন্য পর্যাপ্ত পানি পানও গুরুত্বপূর্ণ, যা তার শারীরিক ক্রিয়াকলাপ এবং সাধারণ স্বাস্থ্য বজায় রাখতে সহায়ক।
যদি বাচ্চার ওজন সঠিকভাবে না বাড়ে বা সে খুবই দুর্বল হয়ে পড়ে, তাহলে অবশ্যই একজন শিশু বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
গর্ভাবস্থায় ৯ মাসের বাচ্চার ওজন
৯ মাসের গর্ভাবস্থায় আপনার বাচ্চার বৃদ্ধি অনেকটাই সম্পন্ন হতে চলছে। এই সময়ে আপনার বাচ্চার দৈর্ঘ্য প্রায় ৪৭.৪ সেন্টিমিটার এবং ওজন ২.৬ কিলোগ্রাম। এটি একটি তরমুজের সমান লম্বা।
এই সপ্তাহে, আপনার গর্ভের শিশু সম্ভবত মাথা নিচের দিকে এবং পা উপরের দিকে অবস্থান করছে, যা নরমাল ডেলিভারির জন্য উপযুক্ত অবস্থান। বেশিরভাগ শিশুই এ সপ্তাহ বা আগামী সপ্তাহের মধ্যে এই অবস্থানে চলে আসে।
শিশুর ফুসফুস এখন বেশ উন্নত এবং শ্বাস-প্রশ্বাস নেওয়ার অনুশীলন করছে। জন্মের পর ফুসফুস পুরোপুরি পরিণত হবে, কিন্তু এখন থেকেই শিশুর ফুসফুস শ্বাস নেওয়ার জন্য প্রস্তুত হচ্ছে। গর্ভের ভিতর শিশুকে বাতাস থেকে অক্সিজেন নিতে হয় না, কারণ এটি গর্ভফুলের মাধ্যমে অক্সিজেন পাচ্ছে।
শিশু প্রতিদিন অ্যামনিওটিক ফ্লুইড (গর্ভের পানি) গিলে ফেলে এবং সেই পানি থেকে প্রস্রাব তৈরি করে। এই প্রস্রাবের বেশিরভাগই পানি হয়, কারণ গর্ভফুল বর্জ্য পদার্থ অপসারণ করে।
আপনার শিশুর এই প্রস্তুতি এবং বৃদ্ধির দিকে নজর রাখা গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এটি সুস্থভাবে জন্ম নেওয়ার প্রস্তুতি হিসেবে কাজ করছে।
গর্ভাবস্থায় মায়ের খাদ্য তালিকা
গর্ভাবস্থায় একটি মায়ের খাবারের তালিকায় পুষ্টিকর খাবার রাখা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এটি মা এবং শিশুর স্বাস্থ্য নিশ্চিত করতে সাহায্য করে। এখানে এমন দশটি খাবারের তালিকা দেওয়া হলো যা গর্ভাবস্থায় বিশেষভাবে উপকারী:
১. ডিম: শিশুর মস্তিষ্কের বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে এবং জন্মগত ত্রুটি দূর করতে সাহায্য করে। সিদ্ধ ডিম গর্ভাবস্থায় নিরাপদ এবং স্বাস্থ্যকর।
২. মিষ্টি আলু: এতে প্রচুর ফাইবার, ভিটামিন বি৬, পটাশিয়াম, ভিটামিন সি এবং আয়রন থাকে। কপারও থাকে যা শরীরে আয়রন দ্রুত শোষণ করতে সাহায্য করে। সিদ্ধ বা বেক করা মিষ্টি আলু খাওয়া যেতে পারে।
৩. বাদাম: ওমেগা-৩, প্রোটিন, ফাইবার, এবং বিভিন্ন ভিটামিন ও মিনারেল সমৃদ্ধ। ম্যাগনেশিয়ামও আছে যা প্রিম্যচিউর ডেলিভারির ঝুঁকি কমায়।
৪. শস্য ও ডাল: প্রোটিন, আয়রন, জিংক এবং ক্যালসিয়াম সমৃদ্ধ। এগুলো গর্ভাবস্থায় প্রয়োজনীয় পুষ্টি সরবরাহ করে।
৫. মাংস: প্রোটিন ও আয়রন পাওয়ার একটি ভালো উৎস। এটি শিশুর মস্তিষ্কের বিকাশে সহায়ক।
৬. কমলার রস: পটাশিয়াম ও ভিটামিন সি সমৃদ্ধ যা শিশুর দাঁত ও হাড়ের গঠনকে মজবুত করে।
৭. দই: দুধের চেয়ে বেশি ক্যালসিয়াম এবং ভিটামিন বি ও জিংক সমৃদ্ধ। ক্যালসিয়ামের অভাব শিশু ও মায়ের স্বাস্থ্যে সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে।
৮. ওটস: ফাইবার, প্রোটিন এবং ভিটামিন বি৬ সমৃদ্ধ। সকালবেলা ওটামিল খাওয়া গর্ভাবস্থায় সকালের বমি ভাব ও কোষ্ঠকাঠিন্য কমাতে সাহায্য করে।
৯. শাকসবজি: প্রচুর ভিটামিন ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে যা মা ও শিশুর স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী।
১০. মাছ: ওমেগা-৩ ফ্যাটি এসিড ও প্রোটিনের ভালো উৎস। এটি মায়ের এবং শিশুর স্বাস্থ্য নিশ্চিত করতে সাহায্য করে।
এই খাবারগুলো নিয়মিতভাবে খাদ্য তালিকায় রাখা গর্ভাবস্থায় সুস্থতা ও স্বাস্থ্যের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।
লেখকের শেষকথাঃগর্ভাবস্থায় বাচ্চার ওজন চার্ট - গর্ভাবস্থায় ৯ মাসের বাচ্চার ওজন
আমি সবসময়ই আপনাদের জন্য আপডেট এবং গুরুত্বপূর্ণ তথ্য তুলে ধরার চেষ্টা করি। আজকের আলোচনাটি এখানেই শেষ করছি। আশা করি, নতুন কোনো টপিক নিয়ে আবারও কথা হবে। ততক্ষণ পর্যন্ত ভালো থাকবেন, সুস্থ থাকবেন, এবং আমার জন্য দোয়া করবেন যেন আল্লাহ আমাকে সফলতার উচ্চ শিখরে পৌঁছে দেন। এতক্ষণ আমার সাথে থাকার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহ।
মাইতানহিয়াত আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url