ছেলেদের চুলের খুশকি দূর করার উপায় গুলো জেনে নিন
আপনারা এই আর্টিকেল এর মাধ্যমে আরও জানতে পারবেন চিরতরে খুশকি দূর করার উপায়, চুল পড়া ও খুশকি দূর করার উপায়, মাথার খুশকি ও চুলকানি দূর করার উপায়, খুশকি দূর করার ঔষধ আরো অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় সম্পর্কে।
পোস্ট সূচিপত্রঃ ছেলেদের চুলের খুশকি দূর করার উপায়
- ছেলেদের খুশকি দূর করার উপায়
- চিরতরে খুশকি দূর করার উপায়
- চুল পড়া ও খুশকি দূর করার উপায়
- মাথার খুশকি ও চুলকানি দূর করার উপায়
- লেবু দিয়ে খুশকি দূর করার উপায়
- ছেলেদের চুলের খুশকি দূর করার শ্যাম্পু
- মেয়েদের মাথার খুশকি দূর করার উপায়
- ছেলেদের খুশকি দূর করার ঔষধ
- শীতে চুলের খুশকি দূর করার উপায়
- আমাদের শেষকথা
ছেলেদের চুলের খুশকি দূর করার উপায়
ছেলেদের চুলের খুশকি দূর করার উপায় খুঁজছেন? আপনারা একা নন পৃথিবীর সব পুরুষ মানুষের মাথা ব্যথার প্রধান কারণ হচ্ছে খুশকি। ছেলেদের চুলের খুশকির সমস্যা হওয়ার মুল কারণ হচ্ছে চুলের প্রতি যত্ন না নেওয়া। তবে আমরা এই সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে পারি যদি আমরা কিছু প্রাকৃতিক উপায় মেনে চলি যা বাড়ীতেই সহজে তৈরি করা যায়। চলুন তাহলে আমরা এখন জেনে নিই পুরুষদের চুলের খুশকি প্রতিরোধ করার উপায় সম্পরকেঃ
নিমের পাতাঃ আমরা সবায় জানি নিমের পাতা খুশকি দূর করার জন্য একটি প্রাচীন ও কার্যকরী পদ্ধতি। নিমের মধ্যে থাকা অ্যান্টিফাঙ্গাল উপাদান মাথার ত্বকে জমে থাকা ব্যাকটেরিয়ার বিরুদ্ধে লড়াই করে। আমরা সহজেই সপ্তাহে দুই থেকে তিনবার নিমের তেল দিয়ে মাথার ত্বকে ম্যাসাজ করতে পারি, অথবা নিমের পাতা সেদ্ধ করে সেই পানি ব্যবহার করতে পারি।
অলিভ অয়েলঃ আমাদের মাথার ত্বক প্রায় সব সময়েই শুষ্ক থাকার কারণে খুশকি দেখা দিলে অলিভ অয়েল খুব উপকারী হতে পারে। অলিভ অয়েল গরম করে মাথার ত্বকে ম্যাসাজ করে কিছুক্ষণ পরে ধুয়ে ফেলুন। এতে করে আমাদের মাথার ত্বক নরম থাকে এবং খুশকি কম হয়।
বেকিং সোডাঃ বেকিং সোডা, যাকে আমরা সাধারণত রান্নার উপাদান হিসেবে চিনি, তা খুশকি দূর করতে বেশ কার্যকর একটি প্রাকৃতিক উপায় হতে পারে। যখন আমাদের চুলে খুশকির সমস্যা দেখা দেয়, তখন বেকিং সোডা ব্যবহার করে আমরা খুব সহজেই এই সমস্যার সমাধান পেতে পারি। বেকিং সোডা মাথার ত্বকের অতিরিক্ত তেল ও মৃত কোষগুলো দূর করে এবং এর অ্যান্টিফাঙ্গাল গুণাগুণ মাথার ত্বকের ফাঙ্গাল ইনফেকশন কমাতে সাহায্য করে।
অ্যাসপিরিন ট্যাবলেটঃ অ্যাসপিরিন ট্যাবলেট যা আমাদের ব্যথা জ্বরের জন্য ব্যবহৃত হয় তা খুশকি দূর করার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। শুনতে অবাক লাগলেও স্পিরিনের মধ্যে টাকা সালি সাইলিক এসিড চুলের ত্বকের অতিরিক্ত তেল ও মৃত কোষ দূর করে যা আমাদের চুলের খুশকির প্রধান কারণ। দুইটি এক্সপিরিন ট্যাবলেট শ্যাম্পুর সাথে ভালোভাবে মেখে নিয়ে চলে যেতে ব্যবহার করা যায় তাহলে আমাদের খুশকি অনেকটাই দূর হয়ে যায়।
রিঠা পাওডারঃ রিঠা পাউডার চুলের স্বাস্থ্য বজায় রাখতে এবং খুশকি দূর করতে প্রাকৃতিক একটি উপাদান হিসেবে পরিচিত। রিঠা পাউডার ব্যবহারের পদ্ধতি খুবই সহজ। প্রথমে রিঠা পাউডার কিছু সময়ের জন্য পানিতে ভিজিয়ে রাখুন। তারপর এই মিশ্রণ মাথার ত্বকে লাগান এবং হালকা হাতে ম্যাসাজ করুন। এটি মাথার ত্বকের অতিরিক্ত তেল এবং মৃত কোষ পরিষ্কার করে এবং খুশকি কমাতে সাহায্য করে।
মেথিঃ মেথি বীজ দিয়ে আমরা সহজেই চুলের খুশকি দূর করতে পারি। মেথি বীজকে সারা রাত পানিতে ভিজিয়ে রাখুন। পরদিন সকালে এই ভিজানো বীজগুলো পেস্টে পরিণত করুন। এরপর এই পেস্টটি মাথার ত্বকে লাগান এবং হালকা হাতে ম্যাসাজ করুন। নিয়মিত এই পদ্ধতি অনুসরণ করলে খুশকি দ্রুত কমে যাবে এবং মাথার ত্বক হবে স্বাস্থ্যবান।
অ্যালোভেরা জেলঃ অ্যালোভেরা জেল চুলের যত্নে প্রধান ঔষধ হিসেবে কাজ করে। অ্যালোভেরা জেল ব্যবহার করা খুবই সহজ। প্রথমে অ্যালোভেরা পাতা থেকে তাজা জেল সংগ্রহ করুন। এই জেলটি মাথার ত্বকে লাগান এবং হালকা হাতে ম্যাসাজ করুন। এই প্রাকৃতিক পদ্ধতি নিয়মিত ব্যবহার করলে খুশকি কমে যাবে এবং মাথার ত্বক আর্দ্র ও সুস্থ থাকবে।
নারিকেল তেলঃ মাথায় নারিকেল তেল ব্যবহার করি না এরকম কাউকে খুজে পাওয়া মুশকিল। নারিকেল তেল আমাদের চুলে পুষ্টি প্রদান করে ও খুশকি দূর করতে সাহায্য করে। নারিকেল তেল ব্যবহারের পদ্ধতি খুবই সহজ। প্রথমে নারিকেল তেলটি হালকা গরম করে নিন, যাতে এটি মাথার ত্বকে সহজে প্রবাহিত হতে পারে। এরপর এই গরম তেলটি মাথার ত্বকে ভালোভাবে ম্যাসাজ করুন। তেলটি মাথার ত্বকের গভীরে প্রবাহিত হয় এবং ত্বককে ময়েশ্চারাইজ করে, ফলে পুরুষদের চুলের খুশকি প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে।
চিরতরে খুশকি দূর করার উপায়
চা গাছের তেল ব্যবহার করুনঃ চা গাছের তেল একটি প্রাকৃতিক অ্যান্টি-ফাঙ্গাল এবং অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল এজেন্ট হিসেবে পরিচিত, যা খুশকি কমাতে অত্যন্ত কার্যকর। এটি ব্যবহার করতে হলে, প্রথমে কিছু ক্যারিয়ার তেল যেমন জোজোবা বা বাদাম তেলের সাথে কয়েক ফোঁটা চা গাছের তেল মিশিয়ে নিন। এরপর এই মিশ্রণটি মাথার ত্বকে ভালোভাবে ম্যাসাজ করুন। ১০-১৫ মিনিট এই মিশ্রণটি রেখে দিন এবং তারপর সাধারণভাবে উষ্ণ পানি ও শ্যাম্পু দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। তাই খুশকি থেকে স্থায়ী মুক্তি পেতে চাইলে এই পদ্ধতি অনুসরণ করতে হবে।
খাদ্যাভ্যাস পরিবরতন করুনঃ আপনার ডায়েটের প্রভাব আপনার ত্বক এবং মাথার ত্বকের স্বাস্থ্যের ওপর গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলতে পারে। স্বাস্থ্যকর ত্বক পেতে আপনার খাদ্যতালিকায় প্রচুর ফলমূল, শাকসবজি এবং গোটা শস্য অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। প্রক্রিয়াজাত খাবার, অতিরিক্ত চিনি এবং অ্যালকোহল পরিহার করা ভালো। এই খাদ্যগত পরিবর্তনগুলি শুধুমাত্র খুশকি কমাতে সহায়ক হবে না, বরং আপনার সামগ্রিক স্বাস্থ্যও উন্নত করবে।
মাথায় ভিনেগারের বাবহারঃ ভিনেগার একটি প্রাকৃতিক অ্যাসিড যা আপনার মাথার ত্বকের pH স্তর সঠিক রাখতে সহায়ক হতে পারে। এটি খুশকি থেকে স্থায়ী মুক্তি পেতে চাইলে কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে। ব্যবহার করার জন্য, দুই অংশ জল এবং এক অংশ ভিনেগার মিশিয়ে একটি সমাধান তৈরি করুন। এই মিশ্রণটি ১০-১৫ মিনিট মাথার ত্বকে ম্যাসাজ করুন এবং তারপর সাধারণ পানি ও শ্যাম্পু দিয়ে ।
আরো পড়ুনঃ ২০২৫ সালের ইংরেজি ১২ মাসের ক্যালেন্ডার ছুটির দিন সহ
অ্যান্টি-ড্যান্ড্রাফ শ্যাম্পু ব্যবহার করুনঃ বাজারে বিভিন্ন ধরনের অ্যান্টি-ড্যান্ড্রাফ শ্যাম্পু পাওয়া যায়, তাই আপনার চুলের ধরন অনুযায়ী সঠিক একটি নির্বাচন করা জরুরি। শুষ্ক চুলের জন্য এমন একটি শ্যাম্পু বেছে নিন যা ময়শ্চারাইজিং উপাদানে পূর্ণ। অপরদিকে, তৈলাক্ত চুলের জন্য একটি শ্যাম্পু নির্বাচন করুন যা বিশেষভাবে তৈলাক্ত মাথার ত্বকের সমস্যার সমাধান করে। নিশ্চিত করুন যে, শ্যাম্পু ব্যবহারের সময় অন্তত দুই মিনিট মাথার ত্বকে ভালোভাবে ম্যাসাজ করুন যাতে এটি কার্যকরভাবে কাজ করতে পারে। তাই খুশকি থেকে স্থায়ী মুক্তি পেতে চাইলে এই পদ্ধতি অনুসরণ করতে হবে।
চুল পড়া ও খুশকি দূর করার উপায়
চুল পড়া ও খুশকি দূর করার উপায় সম্পর্কে জানতে হলে আপনাদের এই আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়তে হবে। চুল পড়া ও খুশকি এই দুইটি সমস্যা আমাদের জীবনে অভিসাপ স্বরূপ। অনেকের জন্য, মাথার ত্বকে খুশকি থাকলে চুল পড়ার সমস্যা আরো তীব্র হয়। তাই, খুশকি কমানো গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এটি চুল পড়ার জন্য এক বড় কারণ হতে পারে।
আমাদের ওয়েবসাইটে আপনি খুশকি দূর করার বিভিন্ন উপায় খুঁজে পাবেন। যারা অতিরিক্ত খুশকির সমস্যায় ভুগছেন, তাদের নিয়মিত কিছু সহজ পদক্ষেপ অনুসরণ করলে খুশকি কমিয়ে চুল পড়া নিয়ন্ত্রণে আনতে সাহায্য করতে পারে। শীতকালে খুশকি বেশি হয়, তবে গরমেও সমস্যা হতে পারে। অতিরিক্ত খুশকি চুলের গোঁড়া দুর্বল করে দেয় এবং চুল পড়ার সমস্যা বাড়িয়ে তোলে।
আরো পড়ুনঃ কামরাঙ্গা খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নিন
খুশকি কমাতে প্রথমে আপনাকে নিয়মিত মাথায় শ্যাম্পু করতে হবে এবং তেল দিতে হবে—মোটকথা, চুল পরিষ্কার রাখতে হবে। লেবুর রস ব্যবহার করা একটি প্রাকৃতিক এবং কার্যকরী উপায়। গোসলের আগে, লেবু কেটে তার রস মাথায় লাগান এবং যেখানে খুশকি বেশি সেখানে ঘষুন। লেবুর রস খুশকি কমাতে সাহায্য করবে।
মাথার খুশকি ও চুলকানি দূর করার উপায়
মাথার খুশকি ও চুলকানি অনেকেরই একটি সাধারণ সমস্যা। এ সমস্যার সমাধানে প্রথমে আপনার খাদ্যাভ্যাসে পরিবর্তন আনা প্রয়োজন। তাজা ফল ও সবজি বেশি করে খাওয়া, বিশেষ করে শাকসবজি ও ভিটামিন E সমৃদ্ধ খাবার, মাথার ত্বকের স্বাস্থ্যের উন্নতি করে। এ ছাড়াও, পর্যাপ্ত পানি পান করা মাথার ত্বককে হাইড্রেটেড রাখে যা খুশকি কমাতে সহায়তা করে।
চুল ধোয়ার জন্য আপনি একটি ভালো শ্যাম্পু ব্যবহার করতে পারেন যা খুশকি প্রতিরোধে সহায়তা করে। একটি প্রাকৃতিক শ্যাম্পু নির্বাচন করুন যাতে স্যালিসিলিক অ্যাসিড বা জিঙ্ক পিরিথিওন থাকে, যা খুশকির সমস্যা কমাতে কার্যকরী। প্রতিদিন চুল না ধোয়া ও অতিরিক্ত শ্যাম্পু ব্যবহারের ক্ষেত্রে সতর্ক থাকুন, কারণ এটি মাথার ত্বককে শুকিয়ে দিতে পারে।
প্রাকৃতিক উপাদানগুলোও মাথার খুশকি ও চুলকানি দূর করতে কার্যকরী। উদাহরণস্বরূপ, নারকেল তেল বা অলিভ অয়েল মাথার ত্বকে মাসেজ করা যেতে পারে, যা ত্বককে ময়শ্চারাইজ করে এবং চুলকানি কমাতে সাহায্য করে। এছাড়া, আপেল সিডার ভিনেগার মাথার ত্বকে প্রয়োগ করলে এটি pH ব্যালান্স করে খুশকির সমস্যা কমায়।
অবশেষে, জীবনের চাপ কমানোর চেষ্টা করুন। মানসিক চাপও মাথার ত্বকের স্বাস্থ্যের ওপর প্রভাব ফেলতে পারে। নিয়মিত ব্যায়াম এবং মেডিটেশন করে মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নতি করলে মাথার খুশকি ও চুলকানি কমাতে সহায়তা হয়। আপনার জীবনযাত্রায় এই পরিবর্তনগুলি আনলে নিশ্চয়ই খুশকি ও চুলকানি কমবে।
লেবু দিয়ে খুশকি দূর করার উপায়
লেবু দিয়ে খুশকি দূর করার উপায় সম্পর্কে আমরা সবাই জানতে চাই। খুশকির কারণে চুলের প্রাকৃতিক লাবণ্য হারিয়ে যায় এবং মাথার ত্বকে নানা ধরনের সমস্যা দেখা দিতে পারে। স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মতে, ঠিকভাবে চুলের যত্ন না নেওয়া কিংবা পরিবেশের দূষণ চুলে খুশকি সৃষ্টির প্রধান কারণ। তবে এই সমস্যা থেকে মুক্তির উপায় কী? অনেকেই বিশ্বাস করেন, লেবু ব্যবহার করে খুশকি কমানো সম্ভব। চলুন দেখি, লেবু কিভাবে ব্যবহার করে খুশকি দূর করা যেতে পারে।
চুলের খুশকি দূর করতে অনেক স্বাস্থ্যসচেতন মানুষ অ্যালোভেরা এবং লেবু ব্যবহার করে থাকেন। ২ চা-চামচ অ্যালোভেরা জেল এবং ২ চা-চামচ লেবুর রস মিশিয়ে মাথার ত্বকে লাগান। কিছুক্ষণ হালকা হাতে ম্যাসাজ করুন এবং ১৫ মিনিট রেখে দিন। এরপর সাধারণভাবে চুল ধুয়ে ফেললে খুশকি কমে যাবে এবং মাথার ত্বক আরাম বোধ করবে।
চুলের খুশকি দূর করার জন্য দই ও লেবু অত্যন্ত কার্যকর। ২ চা-চামচ দই, ১ চা-চামচ লেবুর রস এবং ১ চা-চামচ মধু মিশিয়ে একটি পেস্ট তৈরি করুন। এই মিশ্রণটি মাথার ত্বকে লাগিয়ে ২০ মিনিট রেখে দিন। এরপর সাধারণভাবে শ্যাম্পু দিয়ে চুল ধোয়ে ফেলুন। দই এবং লেবুর এই সংমিশ্রণ খুশকি দূর করতে সাহায্য করবে এবং স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরাও এই পদ্ধতি অনুসরণ করার পরামর্শ দেন।
খুশকি দূর করতে আমলকী ও লেবু গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এই দুই উপাদানকে ব্যবহার করে খুশকি সমস্যার সমাধান করা সম্ভব। ২ চা-চামচ লেবুর রসের সাথে ২ চা-চামচ আমলকীর রস মিশিয়ে একটি মিশ্রণ তৈরি করুন। এই মিশ্রণটি মাথার ত্বকে লাগিয়ে আধা ঘণ্টা অপেক্ষা করুন। তারপর সাধারণভাবে শ্যাম্পু দিয়ে চুল ধুয়ে ফেলুন। এই পদ্ধতি নিয়মিত ব্যবহারে খুশকি কমাতে সাহায্য করবে।
ছেলেদের চুলের খুশকি দূর করার শ্যাম্পু
ছেলেদের চুলের খুশকি সমস্যা সামলানোর জন্য বাজারে বেশ কিছু কার্যকর শ্যাম্পু পাওয়া যায়। তবে সঠিক শ্যাম্পু নির্বাচন করলে সমস্যা অনেকটাই সমাধান হতে পারে। এখানে কয়েকটি জনপ্রিয় ও কার্যকর শ্যাম্পুর কথা উল্লেখ করা হলো:
- Head & Shoulders Men Ultra Total Care Anti-Dandruff Shampoo: এই শ্যাম্পুতে রয়েছে পিরিথায়ন জিঙ্ক, যা খুশকি দূর করতে সহায়তা করে এবং চুলকে স্বাস্থ্যবান রাখে। এটি দৈনিক ব্যবহারের জন্য উপযুক্ত এবং চুলকে প্রফেশনাল লুক দেয়।
-
Nizoral Anti-Dandruff Shampoo: এই শ্যাম্পুতে কিটোকোনাজোল নামক একটি শক্তিশালী অ্যান্টি-ফাঙ্গাল উপাদান রয়েছে যা খুশকির সমস্যাকে মোকাবেলা করতে কার্যকরী। এটি গুরুতর খুশকির সমস্যায় বিশেষভাবে উপযোগী।
-
Dove Men+Care Extra Fresh Anti-Dandruff Shampoo: এটি খুশকি দূর করার পাশাপাশি চুলকে তাজা ও সতেজ রাখে। তৈলাক্ত মাথার ত্বকের জন্য এটি বিশেষভাবে উপযোগী এবং ব্যবহারের পর চুল হবে নরম ও প্রাণবন্ত।
-
L'Oreal Paris Men Expert Antidandruff Shampoo: এই শ্যাম্পু ত্বকের অস্বস্তি দূর করতে এবং খুশকি কমাতে সহায়তা করে। এটি তৈলাক্ত মাথার ত্বকের জন্য ভালো এবং চুলের গোড়া থেকে শুরু করে প্রান্ত পর্যন্ত কাজ করে।
-
Neutrogena T/Gel Therapeutic Shampoo: এটি একটি চিকিৎসাশাস্ত্রীক শ্যাম্পু যা খুশকি এবং স্ক্যাল্পের অন্যান্য সমস্যার সমাধানে ব্যবহৃত হয়। এটি নিয়মিত ব্যবহারের মাধ্যমে খুশকি কমাতে সাহায্য করে এবং স্ক্যাল্পকে প্রশান্তি দেয়।
এই শ্যাম্পুগুলির নিয়মিত ব্যবহার করলে খুশকি সমস্যা অনেকটা নিয়ন্ত্রণে আসবে। তবে, সঠিক ফলাফলের জন্য আপনার চুলের ধরন ও স্ক্যাল্পের সমস্যা অনুযায়ী শ্যাম্পু নির্বাচন করা গুরুত্বপূর্ণ। এর মাধ্যমে পুরুষদের চুলের খুশকি প্রতিরোধ করার উপায় সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যায়।
মেয়েদের মাথার খুশকি দূর করার উপায়
খুশকি চুলের একটি সাধারণ সমস্যা, যা একবার মাথার ত্বকে আক্রমণ শুরু করলে দ্রুত বৃদ্ধি পেতে থাকে। এটি চুলকানি এবং স্ক্যাল্পে চিটচিটে ভাব সৃষ্টি করতে পারে। খুশকির বিভিন্ন কারণের মধ্যে রয়েছে ড্রাই স্কিন, সেবোরিহিক ডার্মাটাইটিস, কেমিকেলযুক্ত প্রসাধনী, সংবেদনশীলতা, এবং মাথার ত্বকে খুশকি সৃষ্টিকারী ছত্রাকের বৃদ্ধি।
যদিও বাজারে অনেক অ্যান্টি-ড্যানড্রাফ প্রোডাক্ট পাওয়া যায়, তবে ঘরোয়া উপায়গুলি প্রমাণিতভাবে খুশকি কমাতে সাহায্য করে। এখানে তিনটি কার্যকরী উপায় সম্পর্কে জানানো হলো:
- নারকেল তেলঃ নারকেল তেল খুশকি রোধে অত্যন্ত কার্যকরী। এটি মাথার ত্বকের শুষ্কতা দূর করতে সাহায্য করে এবং অ্যান্টি-মাইক্রোবিয়াল বৈশিষ্ট্যের কারণে খুশকি সৃষ্টিকারী ছত্রাকের বিরুদ্ধে লড়াই করে। নারকেল তেল ব্যবহার করলে ত্বকের স্বাস্থ্য উন্নত হয় এবং একজিমার মতো চর্মরোগও কমতে পারে।
-
অ্যালোভেরাঃ
অ্যালোভেরা একটি প্রাকৃতিক উপাদান যা চুল এবং ত্বকের স্বাস্থ্যের জন্য অনেক উপকারী। এটি অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল এবং অ্যান্টি-ফাঙ্গাল বৈশিষ্ট্য সমৃদ্ধ। অ্যালোভেরা মাথার ত্বককে শান্ত করে এবং খুশকি সৃষ্টিকারী ছত্রাকের বিরুদ্ধে লড়াই করে। এটি প্রদাহ কমাতেও সাহায্য করে। -
বেকিং সোডাঃ
বেকিং সোডা খুশকি দূর করার একটি সহজ ও প্রমাণিত উপায়। এটি মৃত ত্বকের কোষ দূর করতে সহায়তা করে এবং চুলকানি কমায়। বেকিং সোডার অ্যান্টি-ফাঙ্গাল বৈশিষ্ট্য মাথার ত্বকে খুশকি সৃষ্টিকারী ছত্রাক ধ্বংস করতে সাহায্য করে। ব্যবহারের জন্য, ভেজানো চুলের সঙ্গে সরাসরি বেকিং সোডা ব্যবহার করুন এবং মাথার ত্বকে ম্যাসাজ করুন। কিছুক্ষণ অপেক্ষা করে শ্যাম্পু ও কন্ডিশনার দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।
এই ঘরোয়া উপায়গুলি নিয়মিত ব্যবহার করলে খুশকির সমস্যা সহজেই নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব।
ছেলেদের খুশকি দূর করার ঔষধ
কেটোকোনাজোলঃ কেটোকোনাজোল একটি অ্যান্টি-ফাঙ্গাল ঔষধ যা মূলত ফাঙ্গাস দ্বারা সৃষ্ট সংক্রমণ এবং মাথার ত্বকের খুশকি দূর করতে ব্যবহৃত হয়। কেটোকোনাজোল সাধারণত শ্যাম্পু আকারে পাওয়া যায়, যা মাথার ত্বকে সরাসরি প্রয়োগ করা হয়।
কেটোকোনাজোল শ্যাম্পুটি সপ্তাহে ২-৩ বার ব্যবহার করুন। শ্যাম্পুটি মাথার ত্বকে ভালোভাবে ম্যাসাজ করে ৫-১০ মিনিট রেখে দিন, তারপর ভালোভাবে পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।
জিংক পিরিথিওনঃ জিংক পিরিথিওন একটি অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল এবং অ্যান্টি-ফাঙ্গাল উপাদান, যা সাধারণত খুশকি এবং সেবোরিয়িক ডার্মাটাইটিসের মতো মাথার ত্বকের সমস্যা সমাধানে ব্যবহৃত হয়। এটি শ্যাম্পু, ক্রিম, এবং স্ক্যাল্প লোশনের মতো বিভিন্ন চুলের প্রসাধনীতে পাওয়া যায়।
জিংক পিরিথিওন শ্যাম্পুটি চুল এবং মাথার ত্বকে প্রয়োগ করে ভালোভাবে ম্যাসাজ করুন। শ্যাম্পুটি মাথার ত্বকে ৩-৫ মিনিট রেখে তারপর পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। সপ্তাহে ২-৩ বার নিয়মিত ব্যবহারের মাধ্যমে খুশকি নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়।
ক্যালসিয়াম প্যান্থেনেটঃ ক্যালসিয়াম প্যান্থেনেট, যা ভিটামিন B5 এর একটি উৎস, এটি সাধারণত চুলের স্বাস্থ্য বজায় রাখার জন্য ব্যবহৃত হয়। এটি চুলের বৃদ্ধি, শক্তি, এবং স্বাস্থ্য উন্নত করতে সাহায্য করে। ক্যালসিয়াম প্যান্থেনেট অনেক চুলের প্রসাধনী, যেমন শ্যাম্পু, কন্ডিশনার, এবং সাপ্লিমেন্টে পাওয়া যায়।
ক্যাপসুল বা ট্যাবলেট হিসেবে এটি দৈনিক নির্দিষ্ট মাত্রায় গ্রহণ করা হয়। লোশন বা তেল আকারে এটি চুলের গোড়ায় প্রয়োগ করে ম্যাসাজ করা হয়। চুলের যত্নে এটি নিয়মিতভাবে ব্যবহৃত হতে পারে, তবে মাত্রা নির্ধারণে চিকিৎসকের পরামর্শ নেয়া উচিত।
ছেলেদের চুলের খুশকি দূর করার উপায়গুলোর মধ্যে ঔষধ একটি। আশা করি পোস্টটি পড়ে আপনারা ভালো একটি ধারণা পাবেন পুরুষদের চুলের খুশকি প্রতিরোধ করার উপায় সম্পর্কে।
মাইতানহিয়াত আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url