মিল্ক শেক এর উপকারিতা - মিল্ক শেক খাওয়ার নিয়ম

আপনি কি মিল্ক শেক এর উপকারিতা সম্পর্কে জানতে চান? মিষ্টি মিল্ক শেক কি আপনার পছন্দের তালিকায় রয়েছে? এই পানীয়টি শুধু সুস্বাদু নয়, বরং যদি সঠিকভাবে তৈরি করা হয়, তবে এটি আপনার স্বাস্থ্যের জন্যও উপকারী হতে পারে। 

মিল্ক শেক এর উপকারিতার পাশাপাশি আপনাকে মিল্ক শেক খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে জানতে হবে। মিল্ক শেক পান করার পর কি আপনি লক্ষ্য করেছেন যে দীর্ঘ সময় পর্যন্ত ক্ষুধা অনুভব করেন না? এর কারণ হলো, মিল্ক শেকে থাকা প্রোটিন, কার্বোহাইড্রেট, ভিটামিন এবং খনিজ পদার্থ আপনার শরীরকে দীর্ঘক্ষণ পর্যন্ত সক্রিয় রাখতে সাহায্য করে।

পোষ্ট সূচীপত্রঃ মিল্ক শেক এর উপকারিতা - মিল্ক শেক খাওয়ার নিয়ম

মিল্ক শেক এর উপকারিতা 

মিল্ক শেক এর উপকারিতা অসংখ্য যা বলে শেষ করা যায় না। আপনি কি জানেন যে মিল্ক শেক সঠিক ভাবে প্রস্তুত করলে আপনাকে অসাধারণ স্বাস্থ্য উপকারিতা দিতে পারে? মিষ্টি মিল্ক শেক শুধু সুস্বাদু নয়, এটি সঠিকভাবে বানানো হলে একটি পুষ্টিকর পানীয় হিসেবেও কাজ করতে পারে।
অনেকেই মনে করেন যে দোকানের মিল্ক শেক প্রক্রিয়াজাতকরণের কারণে স্বাস্থ্যকর নয়, তবে আপনি যদি বাড়িতে নিজের হাতে এটি তৈরি করেন, তাহলে আপনি আরও বেশি উপকার পেতে পারেন।
মিল্ক শেককে ঘন এবং সমৃদ্ধ করতে, অনেকেই মটরশুটি গাম বা অন্যান্য কম-ক্যালোরি ফাইবার যেমন জ্যাথাম গাম ব্যবহার করেন, যা শেককে আরও পুষ্টিকর করে তোলে। তাহলে চলুন জেনে নেওয়া যাক মিল্ক শেক এর উপকারিতা সম্পর্কেঃ

পুষ্টিকর উপাদানের সমৃদ্ধি: মিল্ক শেকে থাকে প্রচুর পরিমাণে পুষ্টি, যা শরীরের প্রয়োজনীয় পুষ্টি ঘাটতি পূরণ করতে সহায়ক।

অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সরবরাহ: মিল্ক শেকে উপস্থিত অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে।

কার্বোহাইড্রেটের চাহিদা পূরণ: যারা কার্বোহাইড্রেটের ঘাটতিতে ভুগছেন, তাদের জন্য মিল্ক শেক একটি আদর্শ পানীয়, যা শরীরের শক্তি পুনরুদ্ধারে সহায়ক।

ওজন বৃদ্ধি: নিয়মিত মিল্ক শেক খেলে শরীরের ওজন বৃদ্ধি পেতে পারে, বিশেষ করে যারা ওজন কমানোর পরিবর্তে বাড়ানোর চেষ্টা করছেন।

হৃদযন্ত্রের স্বাস্থ্য রক্ষা: গবেষণায় দেখা গেছে, মিল্ক শেক হার্টের সুস্থতায় ইতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।

মস্তিষ্ককে সতেজ রাখে: মিল্ক শেকের পুষ্টিগুণ মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা বাড়াতে এবং মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নতিতে সহায়ক।

পেশী গঠন: মিল্ক শেকে থাকা প্রোটিন পেশী গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে এবং শরীরের সামগ্রিক স্বাস্থ্য উন্নতিতে সহায়তা করে।

হাড়ের মজবুতি: মিল্ক শেকের ক্যালসিয়াম ও অন্যান্য পুষ্টি উপাদান হাড়কে শক্তিশালী করে এবং বাচ্চাদের হাড়ের বৃদ্ধিতে সহায়তা করে।

ভিটামিনের ঘাটতি পূরণ: মিল্ক শেকে থাকা ভিটামিন ডি, বি এবং অন্যান্য ভিটামিন শরীরে প্রয়োজনীয় ভিটামিনের চাহিদা পূরণ করে।

দাঁতের যত্ন: এতে থাকা ক্যালসিয়াম ও প্রোটিন দাঁতকে মজবুত রাখে এবং সুস্থ দাঁতের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

শিশুদের হাড়ের বৃদ্ধি: বাড়ন্ত বয়সে শিশুদের হাড়ের বৃদ্ধি ও শক্তি বৃদ্ধিতে মিল্ক শেক বিশেষভাবে উপকারী।

মস্তিষ্কের সুস্থতা: মিল্ক শেকে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট মস্তিষ্ককে সজীব ও সুস্থ রাখে, যা স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধিতেও সহায়ক।

আশা করি, এতক্ষণে আপনি মিল্ক শেকের বিভিন্ন উপকারিতা সম্পর্কে জানতে পেরেছেন। এবার আসুন, মিল্ক শেক খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে আপনারা জেনে নিন।

মিল্ক শেক খাওয়ার নিয়ম

মিল্ক শেক খাওয়ার নিয়ম অবশ্যই মেনে চলতে হবে, তা নাহলে আপনারা এর উপকারিতা পাবেন না। প্রথমেই, রাতে ঘুমানোর আগে মিল্ক শেক খাওয়াটা বেশ উপকারী হতে পারে। এটি খাওয়ার জন্য প্রথমে এক গ্লাস গরম দুধ নিন এবং তার সঙ্গে এক চা চামচ পরিমাণ মিল্ক শেক পাউডার যোগ করুন। দুধটি গরম থাকতে থাকতে ভালোভাবে নাড়ুন, যাতে পাউডার সম্পূর্ণভাবে মিশে যায় এবং এক ধরনের ঘন মিশ্রণ তৈরি হয়।

মানুষের দুধ পান করার অভ্যাস অন্যান্য স্তন্যপায়ী প্রাণীদের থেকে আলাদা। অন্য কোনো প্রাণী স্তন্যপানকালীন সময় শেষে দুধ পান করে না, কিন্তু মানুষ দুধের পুষ্টিগুণ ও সুস্বাদু স্বাদের কারণে জীবনের প্রতিটি ধাপেই দুধ পান করতে ভালোবাসে। দুধের বিভিন্ন রূপ, যেমন মিল্ক শেক, শুধু পুষ্টির জন্য নয়, বরং এর মজাদার স্বাদের জন্যও অত্যন্ত জনপ্রিয়।

বাড়িতে মিল্ক শেক তৈরি করার সময়, আপনি বিভিন্ন উপাদান ব্যবহার করতে পারেন যা এই পানীয়টিকে আরও সুস্বাদু করে তোলে। প্রক্রিয়াজাতকৃত মিল্ক শেকের চেয়ে বাড়িতে তৈরি মিল্ক শেক অবশ্যই স্বাস্থ্যকর ও অধিক পুষ্টিকর। নিয়মিতভাবে মিল্ক শেক খাওয়ার জন্য কিছু সাধারণ নিয়ম অনুসরণ করতে হবে। যেমন, খাওয়ার সময়ের পূর্বে এটি পান করা, সঠিক পরিমাণে পাউডার ব্যবহার করা, এবং সঠিক মিশ্রণ তৈরি করা।

আরো পড়ুনঃ এলোভেরা জেল দিয়ে ফর্সা হওয়ার উপায় গুলো জেনে নিন 

মিল্ক শেক খাওয়ার নিয়মগুলো মেনে চলা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। রাতে খাওয়ার ৩০ মিনিট পূর্বে এটি পান করা উচিত। এভাবে নিয়মিতভাবে মিল্ক শেক পান করলে আপনি কয়েক দিনের মধ্যেই এর সুফল পেতে শুরু করবেন। 

চকলেট মিল্ক শেকঃ চকলেট মিল্ক শেক বাচ্চাদের জন্য একটি বিশেষভাবে প্রিয় পানীয়, কারণ এতে তাদের প্রিয় চকলেটের স্বাদ যুক্ত থাকে।চকলেট মিল্ক শেক বানাতে প্রথমে কিছু উপকরণ সংগ্রহ করতে হবে। যেমন: ক্যারামেল আইসক্রিম, প্রয়োজনমতো দুধ, একটি পাকা কলা, ভ্যানিলা ফ্লেভার, এবং লিকুইড চকলেট।

প্রথমে একটি ব্লেন্ডারে দুধ ঢালতে হবে। এরপর এর সাথে ক্যারামেল আইসক্রিম, পাকা কলা, এবং ভ্যানিলা ফ্লেভার যোগ করতে হবে। সবশেষে লিকুইড চকলেট যোগ করে ব্লেন্ডার চালাতে হবে যতক্ষণ না সবকিছু মসৃণভাবে মিশে যায়।

এই মিশ্রণটি ভালোভাবে ব্লেন্ড হয়ে গেলে, তা গ্লাসে ঢেলে ঠান্ডা ঠান্ডা পরিবেশন করা যায়। এর স্নিগ্ধ স্বাদ এবং চকলেটের সমৃদ্ধ গন্ধ বাচ্চাদের আকৃষ্ট করবে এবং তারা উপভোগ করবে।

স্ট্রবেরি মিল্ক শেকঃ স্ট্রবেরি মিল্ক শেক একটি জনপ্রিয় এবং সুস্বাদু পানীয় যা বিশেষত গরমের দিনে দারুণ উপভোগ্য।

প্রথমে, কিছু স্ট্রবেরি নিন এবং এগুলোকে ভালোভাবে ধুয়ে নিন। স্ট্রবেরি গুলি কেটে নিন যাতে এগুলো মিশ্রণে সহজেই ব্লেন্ড হতে পারে। তারপর একটি ব্লেন্ডারে দুই কাপ দুধ ঢালুন। এর সাথে যোগ করুন প্রায় এক কাপ স্ট্রবেরি এবং প্রয়োজনমতো চিনি অথবা মধু। চাইলে, কিছু বরফও যোগ করতে পারেন যাতে মিল্ক শেকটি ঠান্ডা ও স্নিগ্ধ হয়।

ব্লেন্ডার চালিয়ে মিশ্রণটি ভালোভাবে মিশিয়ে নিন, যতক্ষণ না সবকিছু মসৃণ এবং হালকা হয়ে যায়। কিছু স্ট্রবেরি টুকরো যদি রেখে দেন, তাহলে পরে সাজানোর জন্য ব্যবহার করতে পারেন।

আপনার স্ট্রবেরি মিল্ক শেক তৈরি হয়ে গেলে, তা একটি গ্লাসে ঢেলে পরিবেশন করুন। চাইলে, এর উপরে কিছু স্ট্রবেরি টুকরো অথবা একটু হুইপড ক্রিম দিয়ে সাজাতে পারেন।

মিল্ক শেক এর পুষ্টিগুণ

মিল্ক শেক একটি পুষ্টিকর পানীয় যা শরীরের প্রয়োজনীয় নানা ধরনের পুষ্টি উপাদান সরবরাহ করতে সক্ষম। যদিও অনেকেই মিল্ক শেকের পুষ্টিগুণ সম্পর্কে পুরোপুরি অবহিত নন, এটি আসলে আমাদের শরীরের বিভিন্ন প্রয়োজন পূরণের ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

মিল্ক শেক তৈরির সময় বিভিন্ন ধরনের উপাদান ব্যবহৃত হয়, যেমন দুধ, ফল, প্রোটিন পাউডার এবং আরও অনেক কিছু। এসব উপাদান একত্রে কাজ করে একটি পুষ্টিকর মিশ্রণ তৈরি করে যা শরীরের প্রতিদিনের প্রয়োজনীয়তা পূরণ করতে সহায়তা করে। বিশেষ করে গরমের সময়, মিল্ক শেক আমাদের শরীরকে সতেজ রাখার জন্য একটি আদর্শ পানীয়।

আরো পড়ুনঃ কাঁচা কলা খাওয়ার উপকারিতা-অপকারিতা ও তার পুষ্টিগুণ 

আপনি যদি প্রতিদিন মিল্ক শেক সঠিক নিয়ম মেনে খান, তবে এটি শরীরের প্রয়োজনীয় পুষ্টি সরবরাহের একটি ভালো উৎস হিসেবে কাজ করবে। মিল্ক শেকে উপস্থিত কার্বোহাইড্রেট, ভিটামিন, খনিজ এবং প্রোটিনগুলি শরীরের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। এসব পুষ্টিগুণ শরীরের বিভিন্ন ফাংশন উন্নত করতে এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে।

তাহলে, চলুন এক নজরে দেখে নেয়া যাক প্রতি ১০০ গ্রাম মিল্ক শেকে কত পরিমাণ পুষ্টি উপাদান পাওয়া যায়ঃ

head 1 head 2
সোডিয়াম ৯৫ মিলিগ্রাম
সুগার ১৮ গ্রাম
ক্যালসিয়াম ১৪%
ক্যালোরি ১১১.৯ গ্রাম
ম্যাগ্নেসিয়াম ৩%
পটাসিয়াম ১৮৩ মিলিগ্রাম
প্রোটিন ৩.৯ গ্রাম
ফ্যাট ১.৯ গ্রাম
শর্করা ১৮ গ্রাম
ভিটামিন ডি ১২%
কোলেস্টেরল ১২ মিলিগ্রাম

মিল্ক শেকের প্রোটিনের পরিমাণ শরীরের পেশী বৃদ্ধিতে সহায়তা করে, এবং এতে থাকা ভিটামিন ও খনিজ শরীরের সার্বিক সুস্থতা বজায় রাখে। এর ফলে, আপনি যদি নিয়মিতভাবে মিল্ক শেক খান, তবে এটি শরীরের প্রয়োজনীয় পুষ্টির যোগান দিতে সাহায্য করবে এবং আপনার স্বাস্থ্যের উন্নয়ন সাধনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

মিল্ক শেক খেলে কি ওজন বাড়ে

মিল্ক শেকের বিভিন্ন প্রকারের মধ্যে, যেমন কলার মিল্ক শেক এবং বাদামের মিল্ক শেক, প্রায়ই প্রশ্ন উঠতে থাকে যে এগুলি কি আসলেই ওজন বাড়াতে সহায়ক? এর উত্তরে বলা যায়, মিল্ক শেক ওজন বৃদ্ধির জন্য কার্যকর হতে পারে, তবে এটি কিছু নির্দিষ্ট শর্তের উপর নির্ভর করে।

মিল্ক শেকের মধ্যে সাধারণত থাকে উচ্চ ক্যালোরি এবং চিনি, যা আপনার শরীরের ক্যালোরির চাহিদা পূরণ করতে সাহায্য করতে পারে। এটি বিশেষ করে তাদের জন্য উপকারী হতে পারে যারা সহজে ওজন বাড়াতে চান। তবে, মিল্ক শেকের সাহায্যে ওজন বৃদ্ধির ফলাফল নির্ভর করে এর ব্যবহারের পরিমাণ এবং আপনার সামগ্রিক খাদ্যতালিকার উপর। অর্থাৎ, আপনার প্রতিদিনের ক্যালোরি গ্রহণ কতটা তা মিল্ক শেকের কার্যকারিতার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

কলার মিল্ক শেক যেমন ভিটামিন বি৬, ভিটামিন সি, এবং অ্যান্টিঅক্সিড্যান্টস প্রদান করে, যা শরীরের পুষ্টি বৃদ্ধিতে সহায়ক। বাদামের মিল্ক শেকও বেশ উপকারী হতে পারে, কারণ এটি পুষ্টিগুণে সমৃদ্ধ এবং ওজন বৃদ্ধিতে সহায়ক প্রোটিন এবং ফ্যাট সরবরাহ করে।

তবে, শুধু মিল্ক শেক খেলে কেবল ওজন বাড়ানো সম্ভব নয়। এটি আপনার খাদ্যতালিকার একটি অংশ হিসেবে গ্রহণ করতে হবে এবং আপনি কতটুকু ক্যালোরি গ্রহণ করছেন তাও লক্ষ্য রাখতে হবে। মিল্ক শেকের ক্যালোরি সামগ্রিক খাদ্য ক্যালোরির মধ্যে যুক্ত হলে আপনার ওজন বাড়ানোর প্রক্রিয়াটি ত্বরান্বিত হতে পারে।

সুতরাং, যদি আপনি মিল্ক শেক নিয়মিতভাবে এবং সঠিক পরিমাণে গ্রহণ করেন, তবে এটি আপনার শরীরের ক্যালোরি বাড়ানোর জন্য সহায়ক হতে পারে। তবে, আপনার দৈনন্দিন খাদ্যতালিকা এবং জীবনযাপন পদ্ধতির উপর নির্ভর করে এটি কতটা কার্যকর হবে তা নির্ভর করবে।

অরিজিনাল মিল্ক শেক চেনার উপায়

বর্তমানে বাজারে অনেক ধরনের মিল্ক শেক পাওয়া যায়, কিন্তু আসল ও নকল মিল্ক শেক চেনা অনেক সময় কঠিন হয়ে পড়ে। তাই আসল মিল্ক শেক চেনার কিছু সহজ উপায় জানা থাকলে আপনি বাজারে কিংবা অনলাইনে কেনাকাটার সময় সঠিক পণ্যটি নির্বাচন করতে পারবেন।

প্রথমত, প্যাকেজিং খুবই গুরুত্বপূর্ণ। যখনই আপনি কোনো দোকান থেকে মিল্ক শেক কিনবেন, নিশ্চিত করুন যে প্যাকেটের পিছনে কুমিল্লা, বাংলাদেশ লেখা আছে। যদি অন্য কোনো জেলার নাম লেখা থাকে, তাহলে সেটি সম্ভবত নকল পণ্য হতে পারে। আসল মিল্ক শেক সাধারণত USA থেকে আসে এবং কুমিল্লায় প্যাকেটিং করে দেশে রপ্তানি করা হয়।

এরপর, পণ্যের রঙের দিকে লক্ষ্য রাখুন। আসল মিল্ক শেকের রঙ সাধারণত নির্দিষ্ট একটি ছকে থাকে, যা নকল পণ্যের তুলনায় ভিন্ন হতে পারে। তাই, পণ্য কেনার আগে এর রঙ এবং শেড সম্পর্কে জেনে নিন।

পণ্যের গন্ধও গুরুত্বপূর্ণ একটি সূচক। আসল মিল্ক শেক কখনো তীব্র বা অস্বাভাবিক গন্ধযুক্ত হবে না। যদি পণ্যটির গন্ধ অস্বাভাবিক বা প্রচণ্ড হয়, তাহলে সেটি নকল হতে পারে।

এই সমস্ত বিষয়গুলো খেয়াল রেখে আপনি সহজেই আসল মিল্ক শেক চিহ্নিত করতে পারবেন এবং নিশ্চিত করতে পারবেন যে আপনি যেটি কিনছেন তা সঠিক ও মানসম্পন্ন।

ওয়েট গেইন মিল্ক শেক খাওয়ার নিয়ম

ওয়েট গেইন মিল্ক শেক খাওয়ার সঠিক নিয়ম অনুসরণ করলে আপনি ভালো ফলাফল পাবেন। এটি খাওয়ার আগে কিছু বিষয় মাথায় রাখা গুরুত্বপূর্ণ।

প্রথমত, ওয়েট গেইন মিল্ক শেক তৈরির জন্য এক গ্লাস গরম দুধ অথবা গরম পানি নিন। এর মধ্যে এক চামচ ওয়েট গেইন মিল্ক শেক মেশান এবং ভালোভাবে মিক্স করুন। এক থেকে দুই মিনিট ধরে মিক্স করতে হবে যাতে সমস্ত উপাদান পুরোপুরি মিশে যায়। প্যাকেটের উপর ভাসমান উপাদানগুলো খেয়ে ফেলুন। ওয়েট গেইন মিল্ক শেক রাতের খাবার পর খাওয়া বিশেষভাবে উপকারী, কিন্তু সকালে খাওয়াও যেতে পারে। রাতের খাবার পর এই শেক খাওয়ার পর বিশেষ ফলাফল পাওয়া যায়।

ওয়েট গেইন মিল্ক শেকের কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নেই কারণ এটি প্রাকৃতিক উপাদান দিয়ে তৈরি, যেমন বাদাম, মাশরুম, কালোজিরা, কিসমিস ইত্যাদি। এই উপাদানগুলো ভিটামিন, মিনারেল, ক্যালসিয়াম, আয়রন ইত্যাদি প্রয়োজনীয় পুষ্টি সরবরাহ করে। নিয়মিত এই শেক খেলে শরীরের প্রয়োজনীয় পুষ্টির অভাব পূরণ হয়, হজম ক্ষমতা বৃদ্ধি পায় এবং হরমোন ব্যালেন্সে সাহায্য করে।

আরো পড়ুনঃ চন্দনের গুঁড়া দিয়ে ত্বক ফর্সা করার ১০ টি উপায় জেনে নিন

শরীরের অগ্রগতি মনিটর করা জরুরি। ওয়েট গেইন মিল্ক শেক খাওয়ার পর আপনার শরীর কেমন প্রতিক্রিয়া দেখাচ্ছে এবং কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া অনুভব হচ্ছে কি না, সে দিকে খেয়াল রাখুন। শরীরের প্রতিক্রিয়া অনুযায়ী অভিজ্ঞ কারো পরামর্শ নিন যদি প্রয়োজন হয়।

মোটকথা, যদি আপনি এসব নিয়ম অনুসরণ করেন, তাহলে ওয়েট গেইন মিল্ক শেক থেকে সর্বোত্তম ফলাফল পাবেন।

মিল্ক শেক এর দাম কত ২০২৪

দামের ব্যাপারে, সাধারণত মিল্ক শেকের দাম ব্র্যান্ড ও পরিমাণ অনুযায়ী পরিবর্তিত হয়। একটি সাধারণ ব্র্যান্ডের মিল্ক শেকের দাম কিছুটা সস্তা হতে পারে, যখন উচ্চমানের ও ব্র্যান্ডেড মিল্ক শেকের দাম তুলনামূলকভাবে বেশি হতে পারে। দাম নির্ধারণে উপাদানগুলোর মান ও সঠিক প্রক্রিয়া অনেকটা ভূমিকা পালন করে।
মিল্ক শেকের নাম মিল্ক শেকের দাম (টাকা)
ওয়েট গেইন মিল্ক শেক ফর হেলদি ২০০ টাকা
কমপ্লান চকোলেট মিল্ক শেক ৬৪৭ টাকা
হেলথ গেইন মিল্ক শেক ন্যাচারাল ফুড ৫৯৯ টাকা
নেসকুইক ব্যানানা ফ্লেভার মিল্ক শেক ৫৭৯ টাকা
মিল্ক মালাই শেক ফর গুড হেলথ ১১৯৯ টাকা
কম্বো মিল্ক, চকোলেট, বাদাম শেক ১১৯০ টাকা
হরলিক্স হট মেল্টেড মিল শেক পাউডার ৯৮৭ টাকা
ক্যালসাম নিউট্রিয়াস মিল্ক শেক ৮৪০ টাকা
Savory Milkshake Premix Vanilla (100G) ১৮০ টাকা
Maltesers. Chocolate Milk Shake Drink (350ml) ৭০০ টাকা
Milky Way Chocolate Milk Shake Drink (350ml) ৮০০ টাকা

মিল্ক শেক এর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া

মিল্ক শেক সাধারণত একটি সুস্বাদু নাস্তা হিসেবে পরিচিত হলেও, এর কিছু স্বাস্থ্যগত পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া থাকতে পারে যা সম্প্রতি গবেষণার মাধ্যমে সামনে এসেছে। বিশেষ করে, একটি নতুন সমীক্ষার তথ্য অনুযায়ী, উচ্চ চর্বিযুক্ত মিল্ক শেক নিয়মিতভাবে খাওয়ার ফলে কিছু উদ্বেগজনক স্বাস্থ্য সমস্যা দেখা দিতে পারে।

গবেষণাটি অগাস্ট ইউনিভার্সিটির মেডিক্যাল কলেজ অফ জর্জিয়ার দ্বারা পরিচালিত হয়েছিল। এতে ১০ জন পুরুষকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছিল যারা ৮০ গ্রাম ফ্যাটযুক্ত এবং ১০০০ ক্যালোরির পুষ্টি সম্পন্ন পূর্ণ চর্বিযুক্ত দুধ ও আইসক্রিম দিয়ে তৈরি মিল্ক শেক পান করিয়েছিলেন। মিল্ক শেক খাওয়ার পর, গবেষকরা অংশগ্রহণকারীদের শরীরের বিভিন্ন পরিবর্তন পর্যবেক্ষণ করেছেন।

গবেষণার ফলাফলে দেখা গেছে যে উচ্চ চর্বিযুক্ত মিল্ক শেক খাওয়ার পর অংশগ্রহণকারীদের রক্তনালীগুলোর প্রসারণের ক্ষমতা কমে গেছে। এ ছাড়া, তাদের লোহিত রক্তকণিকার আকৃতি পরিবর্তিত হয়ে গেছে, যা প্রাকৃতিক ও মসৃণ আকৃতির পরিবর্তে আরও জটিল হয়ে উঠেছে। এই পরিবর্তনগুলি শরীরের সংবহনতন্ত্রে প্রভাব ফেলতে পারে এবং এটি হৃদরোগ ও অন্যান্য স্বাস্থ্য সমস্যার ঝুঁকি বাড়াতে পারে।

যদিও এই প্রভাবগুলি সাধারণত কয়েক ঘণ্টার মধ্যে কমে যায়, তবে যারা নিয়মিতভাবে উচ্চ চর্বিযুক্ত মিল্ক শেক এবং অন্যান্য খাবার খান, তাদের জন্য এটি দীর্ঘমেয়াদী সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে। এই দীর্ঘস্থায়ী প্রভাবগুলো সম্ভবত হৃদরোগ ও অন্যান্য সম্পর্কিত রোগের ঝুঁকি বাড়াতে পারে।

এই সমীক্ষার মাধ্যমে প্রতীয়মান হয় যে, স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস বজায় রাখা এবং মিল্ক শেকের মতো উচ্চ চর্বিযুক্ত খাবার সেবন করার আগে সচেতন থাকা গুরুত্বপূর্ণ।

লেখকের শেষকথাঃ মিল্ক শেক এর উপকারিতা - মিল্ক শেক খাওয়ার নিয়ম

প্রিয় পাঠকবৃন্দ, মিল্ক শেক এর উপকারিতা - মিল্ক শেক খাওয়ার নিয়ম উক্ত আর্টিকেল এর মাধ্যমে আমি আপনাদের যাবতীয় তথ্য দেয়ার চেষ্টা করেছি। যাতে করে আপনারা সঠিক তথ্য পান। মিল্ক শেক কেনার সময় এটি নিশ্চিত করতে হবে যে এটি আসল কিনা নকল। আশা করি এই আর্টিকেল থেকে আপনারা অনেক কিছু জানতে পেরেছেন। আজকে এখানেই শেষ করছি।


আর্টিকেলটি যদি আপনার কাছে গ্রহণযোগ্য মনে হয় তবে এটি অন্যদের সাথে শেয়ার করুন। নতুন তথ্যের জন্য আমাদের ওয়েবসাইটে চোখ রাখুন এবং কোনো প্রশ্ন থাকলে কমেন্টের মাধ্যমে আমাদের জানাতে পারেন। আমাদের সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

মাইতানহিয়াত আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url