বিকাশ থেকে লোন নেওয়ার উপায় গুলো জেনে নিন

আপনি কি বিকাশ থেকে লোন নেওয়ার উপায় গুলো সম্পর্কে জানতে চান? তাহলে আপনাকে এই আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়তে হবে। আশা করি আপনি আপনার সব উত্তর পেয়ে যাবেন এই আর্টিকেল এ।
বিকাশের মাধ্যমে ঋণ পাওয়া এখন আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে সহজ। এই প্রবন্ধে আমরা আলোচনা করব বিকাশ থেকে লোন নেওয়ার উপায়, বিকাশ লোন পরিশোধ করার নিয়ম, কিভাবে বিকাশের লোন পরিশোধ করতে হবে, ১০ মিনিটে লোন পাওয়ার উপায় সহ আরো অনেক কিছু। 

পোষ্ট সূচিপত্রঃ বিকাশ থেকে লোন নেওয়ার উপায় গুলো জেনে নিন 

বিকাশ থেকে লোন নেওয়ার উপায়

আপনি যদি বিকাশ থেকে লোন নেওয়ার উপায় নিয়ে জানতে চান তাহলে আপনি সঠিক যায়গায় এসেছেন। প্রথমে আপনাকে জানতে হবে বিকাশ কি এবং কিভাবে কাজ করে।

বিকাশ কী?

বিকাশ হলো বাংলাদেশের একটি জনপ্রিয় মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিস, যা ব্যবহারকারীদের টাকা স্থানান্তর, বিল পরিশোধ এবং ঋণ পাওয়ার সুবিধা দেয়, সবকিছু মোবাইল ডিভাইসের মাধ্যমেই করা যায়। বিকাশের মাধ্যমে যে কোনো সময়, যে কোনো জায়গা থেকে অর্থনৈতিক সেবা গ্রহণ করা সম্ভব, যা দ্রুত এবং ঝামেলামুক্ত ঋণের জন্য উপযুক্ত।

বিকাশ থেকে ঋণ নেওয়া খুব সহজ এবং সরল প্রক্রিয়া। এখানে ধাপে ধাপে কীভাবে ঋণ নেওয়া যায় তা দেওয়া হলো:

  1. বিকাশ অ্যাকাউন্ট তৈরি করুন: বিকাশ থেকে ঋণ পেতে প্রথম ধাপ হলো একটি বিকাশ অ্যাকাউন্ট তৈরি করা। আপনি সহজেই আপনার স্মার্টফোনে বিকাশ অ্যাপ ডাউনলোড করে এবং স্ক্রিনের নির্দেশনা অনুসরণ করে আপনার অ্যাকাউন্ট সেটআপ করতে পারেন।

  2. আপনার পরিচয় যাচাই করুন: বিকাশ অ্যাকাউন্ট তৈরি করার পর, আপনাকে আপনার পরিচয় যাচাই করতে হবে। এটি ঋণ আবেদন প্রক্রিয়ার গুরুত্বপূর্ণ ধাপ, কারণ বিকাশ আপনাকে ঋণ দেওয়ার আগে আপনার পরিচয় নিশ্চিত করতে চায়।

  3. ঋণের জন্য আবেদন করুন: পরিচয় যাচাইয়ের পর, আপনি এখন বিকাশ অ্যাপের মাধ্যমে ঋণের জন্য আবেদন করতে পারবেন। আপনার ব্যক্তিগত এবং আর্থিক তথ্য দিয়ে আবেদন ফর্ম পূরণ করুন এবং এটি পর্যালোচনার জন্য জমা দিন।

  4. অনুমোদনের জন্য অপেক্ষা করুন: আপনার ঋণ আবেদন জমা দেওয়ার পর, আপনাকে বিকাশ থেকে অনুমোদনের জন্য অপেক্ষা করতে হবে। অনুমোদন প্রক্রিয়া সাধারণত কয়েক দিন সময় নেয়, তাই ধৈর্য ধরে অপেক্ষা করুন।

  5. ঋণ প্রাপ্তি: আপনার ঋণ আবেদন অনুমোদিত হলে, ঋণের পরিমাণ সরাসরি আপনার বিকাশ অ্যাকাউন্টে জমা হবে। এরপর আপনি যে কোনো প্রয়োজনের জন্য এই অর্থ ব্যবহার করতে পারবেন।

বিকাশ থেকে ঋণ নেওয়ার সুবিধা

বিকাশ থেকে ঋণ নেওয়ার বেশ কিছু সুবিধা রয়েছে। এর মধ্যে কয়েকটি উল্লেখযোগ্য সুবিধা হলো:

  • দ্রুত এবং ঝামেলামুক্ত ঋণ আবেদন প্রক্রিয়া
  • যে কোনো সময়, যে কোনো জায়গা থেকে তহবিলে অ্যাক্সেস
  • প্রতিযোগিতামূলক সুদের হার
  • নমনীয় পরিশোধের বিকল্প

সুতরাং, বিকাশ থেকে ঋণ নেওয়া একটি সুবিধাজনক এবং সহজ উপায়। সরল আবেদন প্রক্রিয়া এবং দ্রুত অনুমোদনের সময়ের সাথে, বিকাশ ব্যক্তিদের প্রয়োজনীয় আর্থিক সহায়তা প্রদান করতে সক্ষম, যা সঠিক সময়ে সহায়ক হতে পারে।

বিকাশ লোন পরিশোধ করার নিয়ম

বিকাশ ঋণের জনপ্রিয়তা সাম্প্রতিক বছরগুলিতে উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে, যা দ্রুত নগদ অর্থ প্রয়োজন হলে একটি সুবিধাজনক উপায় হয়ে উঠেছে। তবে, বিকাশ ঋণ নেওয়ার আগে এর পরিশোধের নিয়ম-কানুন সম্পর্কে সঠিক ধারণা থাকা অত্যন্ত জরুরি। এই প্রবন্ধে, আমরা বিকাশ ঋণের পরিশোধ প্রক্রিয়া সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করব, যাতে আপনি সময়মতো এবং কার্যকরভাবে ঋণ পরিশোধ করতে পারেন।

বিকাশ ঋণ কীঃ বিকাশ ঋণ হলো স্বল্প-মেয়াদী ঋণ, যা ব্যবহারকারীদের দ্রুত এবং সহজে বিকাশ অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে অর্থ ধার করার সুযোগ দেয়। এই ঋণগুলো সাধারণত কয়েক ঘণ্টার মধ্যে প্রদান করা হয় এবং জরুরি প্রয়োজন বা অপ্রত্যাশিত খরচ মেটানোর জন্য এটি আদর্শ।

ঋণ পরিশোধের বিকল্পঃ বিকাশ ঋণ পরিশোধের জন্য ঋণগ্রহীতাদের বিভিন্ন বিকল্প রয়েছে। সবচেয়ে সাধারণ পদ্ধতি হলো ঋণগ্রহীতার বিকাশ অ্যাকাউন্ট থেকে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ঋণের পরিমাণ এবং সংশ্লিষ্ট ফি কেটে নেওয়া। এছাড়াও, ঋণগ্রহীতারা নগদ বা ব্যাংক ট্রান্সফারের মাধ্যমে নির্ধারিত পেমেন্ট সেন্টারে ঋণ পরিশোধ করতে পারেন।

আরো পড়ুনঃ ২০টি গেম খেলে টাকা আয় ও বিকাশে পেমেন্ট নেয়ার নিয়ম ২০২৪ 

পরিশোধ প্রক্রিয়াঃ মসৃণ পরিশোধ প্রক্রিয়া নিশ্চিত করার জন্য, ঋণগ্রহীতাদের উচিত নির্দিষ্ট দিনে বিকাশ অ্যাকাউন্টে পর্যাপ্ত অর্থ রাখা। যদি সময়মতো টাকা না থাকে, তাহলে অতিরিক্ত ফি বা জরিমানা আরোপ হতে পারে। পরিশোধের সময়সূচি ঠিকঠাক রাখা এবং সময়মতো পরিশোধের জন্য রিমাইন্ডার সেট করা জরুরি। এছাড়াও, ঋণ চুক্তির শর্তাবলী সম্পর্কে ভালোভাবে জানুন যাতে ভবিষ্যতে কোনো সমস্যা বা ভুল বোঝাবুঝি না হয়।

বিলম্বিত পরিশোধ এবং জরিমানাঃ যদি নির্দিষ্ট দিনে ঋণ পরিশোধ করা না হয়, তাহলে অতিরিক্ত ফি বা জরিমানা আরোপিত হতে পারে। যদি সময়মতো ঋণ পরিশোধ করতে না পারেন, তবে ঋণদাতার সাথে যোগাযোগ করে বিকল্প ব্যবস্থা নিয়ে আলোচনা করা উচিত। বিলম্বিত পরিশোধ উপেক্ষা করলে আপনার ক্রেডিট স্কোর খারাপ হতে পারে এবং ভবিষ্যতে ঋণ গ্রহণে অসুবিধা হতে পারে।

সুতরাং, বিকাশ ঋণের পরিশোধের নিয়ম সম্পর্কে সচেতন থাকা একটি চাপমুক্ত ঋণগ্রহণ প্রক্রিয়া নিশ্চিত করতে সহায়ক। পরিশোধের বিকল্প, প্রক্রিয়া এবং বিলম্বিত পরিশোধের ফলাফল সম্পর্কে জানার মাধ্যমে আপনি একটি মসৃণ এবং কার্যকর ঋণ পরিশোধের যাত্রা নিশ্চিত করতে পারেন।

বিকাশ ঋণের সুদের হার ৯%

যখন ঋণ নেওয়ার কথা আসে, তখন একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো সুদের হার। বিকাশ ঋণের ক্ষেত্রে সুদের হার ৯% নির্ধারিত। এটি একটি প্রতিযোগিতামূলক হার, যা আর্থিক সহায়তার প্রয়োজন হলে একটি চমৎকার বিকল্প হতে পারে।

বিকাশ, যা বাংলাদেশে একটি জনপ্রিয় মোবাইল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিস, তার গ্রাহকদের জন্য ৯% নির্ধারিত সুদের হারে ঋণ প্রদান করে থাকে। অন্যান্য আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর তুলনায় এই হার বেশ যুক্তিযুক্ত বলে মনে করা হয়। ব্যক্তিগত প্রকল্প, চিকিৎসা খরচ বা ক্ষুদ্র ব্যবসায় বিনিয়োগের জন্য ঋণ প্রয়োজন হলে বিকাশ ঋণ একটি সুবিধাজনক ও সাশ্রয়ী সমাধান হতে পারে।

বিকাশ ঋণের ৯% সুদের হার মাসিক ভিত্তিতে হিসাব করা হয়। এর মানে হলো আপনি ১০০ টাকা ধার করলে, আপনাকে অতিরিক্ত ৯ টাকা সুদ দিতে হবে। যদিও এটি অল্প মনে হতে পারে, তবে সময়ের সাথে সাথে এই সুদের পরিমাণ বেড়ে যেতে পারে। তাই ঋণ পরিশোধের পরিকল্পনা সাবধানে বিবেচনা করা এবং নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ঋণ ফেরত দেওয়ার সামর্থ্য থাকা জরুরি।

আরো পড়ুনঃ ২০২৪ সালে অনলাইন ইনকাম-নতুনদের জন্য সফল হওয়ার টিপস

বিকাশ ঋণ গ্রহণের অন্যতম সুবিধা হলো এর সহজলভ্যতা। আবেদন প্রক্রিয়াটি সরল এবং অনলাইন বা বিকাশ মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে সম্পন্ন করা যায়। এছাড়াও, অনুমোদন প্রক্রিয়া দ্রুত হয় এবং অর্থ সরাসরি আপনার বিকাশ অ্যাকাউন্টে জমা হয়ে যায়, যার ফলে শাখায় যাওয়ার প্রয়োজন হয় না এবং বড় আকারের ডকুমেন্টেশনও লাগে না।

উপসংহারে, বিকাশ ঋণের ৯% সুদের হার এটিকে একটি প্রতিযোগিতামূলক বিকল্প করে তোলে। সহজ আবেদন প্রক্রিয়া এবং দ্রুত অনুমোদনের মাধ্যমে বিকাশ ঋণ তার গ্রাহকদের জন্য সুবিধাজনক ও সাশ্রয়ী সমাধান প্রদান করে।

কিভাবে বিকাশের লোন পরিশোধ করতে হবে

বিকাশের মাধ্যমে লোন নেওয়ার পর তা সঠিকভাবে ও সময়মতো পরিশোধ করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। নিচে বিকাশ লোন পরিশোধের প্রক্রিয়া বর্ণনা করা হলোঃ

  • আপনার মোবাইল ডিভাইসে বিকাশ অ্যাপটি চালু করুন।
  • মোবাইল নাম্বার এবং পাসওয়ার্ড দিয়ে অ্যাকাউন্টে লগ ইন করুন।
  • অ্যাপের মেনুতে থাকা "লোন" সেকশনে যান।
  • আপনি যে লোনটি পরিশোধ করতে চান, সেটি নির্বাচন করুন।
  • পরিশোধের জন্য বিকাশ ব্যালেন্স বা ব্যাংক অ্যাকাউন্ট লিঙ্ক করে সুবিধাজনক পেমেন্ট অপশন নির্বাচন করুন।
  • পরিশোধের পরিমাণ লিখুন এবং লেনদেনটি নিশ্চিত করুন।
  • সফলভাবে পেমেন্ট হলে অ্যাপের মাধ্যমে একটি নিশ্চিতকরণ বার্তা পাবেন।

এই ধাপগুলো অনুসরণ করে সহজেই বিকাশের লোন পরিশোধ করা সম্ভব। সময়মতো লোন পরিশোধ করলে জরিমানা বা অতিরিক্ত ফি এড়ানো যাবে।

বিকাশ থেকে সর্বোচ্চ কত টাকা লোন নেওয়া যায়

বিকাশের গ্রাহকদের জন্য ঋণ দেওয়ার সীমা বাড়াচ্ছে সিটি ব্যাংক। বর্তমানে বিকাশের গ্রাহকরা সর্বোচ্চ ২০ হাজার টাকা পর্যন্ত ঋণ নিতে পারতেন, তবে নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী এই সীমা বাড়িয়ে ৩০ হাজার টাকা করা হচ্ছে। এই ঋণমূল্যের বৃদ্ধির পাশাপাশি আরও ছয় লাখ বিকাশ গ্রাহককে ঋণের আওতায় আনার পরিকল্পনা রয়েছে। এর ফলে বিকাশের মোট ১৮ লাখ গ্রাহক ঋণ পাওয়ার উপযোগী হবেন।

সিটি ব্যাংকের এই ডিজিটাল ক্ষুদ্রঋণ প্রোগ্রাম ২০২১ সালে শুরু হয়, যেখানে গ্রাহকের লেনদেনের ইতিহাস এবং বিকাশ ব্যবহারের ধরন দেখে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার মাধ্যমে ঋণ পাওয়ার যোগ্যতা নির্ধারণ করা হয়। বিকাশের গ্রাহকরা বিকাশ অ্যাপের মাধ্যমে সহজেই এই ঋণের জন্য আবেদন করতে পারেন এবং ঋণ প্রাপ্তির জন্য কোনো জামানত বা কাগজপত্রের প্রয়োজন হয় না।

আরো পড়ুনঃ শেয়ার বাজারে বিনিয়োগ কিভাবে শুরু করবেন

বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদন অনুযায়ী, ডিজিটাল মাধ্যমে ঋণ দেওয়ার সীমা ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত হলেও, সিটি ব্যাংক ঝুঁকি বিবেচনায় ধীরে ধীরে ঋণের সীমা বাড়াচ্ছে।

আমি বিকাশের ঋণ পাবো কিনা

বিকাশের মাধ্যমে ঋণ পাওয়ার জন্য কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ শর্ত রয়েছে, এবং সবার জন্য এই ঋণ সেবা প্রযোজ্য নয়। বিকাশ থেকে সিটি ব্যাংকের ঋণ পেতে হলে নিচের বিষয়গুলো মাথায় রাখা প্রয়োজন:

  • বিকাশ অ্যাকাউন্টের লেনদেনের ইতিহাস: যাদের বিকাশ অ্যাকাউন্টে নিয়মিত লেনদেন হয় এবং বড় অঙ্কের লেনদেন করা হয়, তাদের ঋণ পাওয়ার সম্ভাবনা বেশি। বিকাশ অ্যাপ ব্যবহার এবং লেনদেনের পরিমাণ দেখে সিটি ব্যাংক সিদ্ধান্ত নেয়, আপনি ঋণ পাওয়ার যোগ্য কিনা।

  • বায়োমেট্রিক রেজিস্ট্রেশন: শুধুমাত্র যেসব গ্রাহক এনআইডি দিয়ে বিকাশ অ্যাকাউন্ট রেজিস্ট্রেশন করেছেন এবং তথ্য হালনাগাদ করেছেন, তারাই ঋণের জন্য বিবেচিত হন।

  • ক্রেডিট হিস্ট্রি: আপনার পূর্বের ব্যাংক লোন বা ক্রেডিট কার্ডের লেনদেনের রেকর্ড ভালো হলে, ঋণ পাওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে।

  • লেনদেনের নিয়মিততা: আপনি যদি বিকাশ অ্যাপের মাধ্যমে নিয়মিত লেনদেন করেন এবং আপনার অ্যাকাউন্টে যথেষ্ট লেনদেন থাকে, তাহলে ঋণ পাওয়ার জন্য বেশি অগ্রাধিকার পাবেন।

এগুলো ঠিক থাকলে আপনি বিকাশ অ্যাপে ঋণ সেবা দেখবেন এবং সেখান থেকে সহজেই ৫০০ থেকে ২০ হাজার টাকা পর্যন্ত ঋণ নিতে পারবেন।

বিকাশ লোনের টাকা পরিশোধ না করলে যা হতে পারে 

বিকাশের মাধ্যমে সিটি ব্যাংক থেকে লোন নেওয়ার ক্ষেত্রে কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় মাথায় রাখা প্রয়োজন, যা আপনাকে ভবিষ্যতে সমস্যায় পড়া থেকে রক্ষা করতে পারে:

  1. লোন পরিশোধের সময়সীমা: সিটি ব্যাংকের নিয়ম অনুযায়ী, বিকাশ লোন আপনাকে সর্বোচ্চ ৩ থেকে ৬ মাসের মধ্যে পরিশোধ করতে হবে। যদি আপনি নির্ধারিত সময়ের মধ্যে লোন পরিশোধ করতে ব্যর্থ হন, তাহলে আপনার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

  2. সুদ হার: বাংলাদেশ ব্যাংকের নিয়ম অনুযায়ী, সিটি ব্যাংক থেকে নেওয়া লোনের ওপর শতকরা ৯% সুদ প্রযোজ্য হবে। লোনের পরিমাণ এবং মেয়াদ অনুযায়ী সুদের পরিমাণ নির্ধারিত হবে।

  3. ক্রেডিট রেকর্ডের প্রভাব: যদি আপনি লোন পরিশোধ না করেন, তাহলে আপনার ক্রেডিট রেকর্ড সিটি ব্যাংক থেকে বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে পাঠানো হবে। এটি আপনার ভবিষ্যতের ঋণ গ্রহণের সুযোগ এবং ব্যাংকিং সম্পর্ককে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে।

  4. আইনগত ব্যবস্থা: লোন পরিশোধ করতে ব্যর্থ হলে, শুধু বিকাশ এবং সিটি ব্যাংকই নয়, বাংলাদেশ ব্যাংকও আপনার বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নিতে পারে, যা আপনার আর্থিক অবস্থাকে আরও জটিল করতে পারে।

পরামর্শ: বিকাশ লোন নেওয়ার আগে নিশ্চিত করুন যে, আপনি লোনের শর্তাবলী সম্পর্কে পূর্ণ ধারণা রাখছেন এবং সেই লোন সঠিক সময়ে পরিশোধ করার সামর্থ্য রাখেন। শুধু খুব জরুরি এবং অনিবার্য পরিস্থিতিতে বিকাশ লোন নেওয়ার কথা ভাবুন, যাতে ভবিষ্যতে অপ্রত্যাশিত আর্থিক বিপদে না পড়েন।

বিকাশ লোন নেওয়ার আগে যেসব বিষয় মাথায় রাখবেন

বিকাশ থেকে লোন নেওয়ার আগে কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় মাথায় রাখা উচিত, যাতে আপনি সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে পারেন এবং ভবিষ্যতে আর্থিক ঝুঁকিতে না পড়েন। এখানে কিছু প্রধান বিষয় উল্লেখ করা হলো:

১. লোনের শর্তাবলী ভালোভাবে পড়ুন

বিকাশ লোনের শর্তাবলী ও নিয়মকানুন ভালোভাবে পড়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। লোনের সময়সীমা, সুদের হার, এবং অন্যান্য চার্জ সম্পর্কে পূর্ণ ধারণা নিন।

২. লোনের প্রয়োজনীয়তা মূল্যায়ন করুন

লোন নেওয়ার আগে নিজের আর্থিক অবস্থার মূল্যায়ন করুন। খুব জরুরি এবং অনিবার্য প্রয়োজন ছাড়া লোন নেওয়া উচিত নয়, কারণ ভবিষ্যতে সুদসহ টাকা ফেরত দিতে হবে।

৩. পরিশোধ করার ক্ষমতা বিবেচনা করুন

লোন নেওয়ার আগে নিশ্চিত করুন যে, আপনি নির্ধারিত সময়ের মধ্যে টাকা পরিশোধ করতে পারবেন। যদি আপনি লোন পরিশোধে ব্যর্থ হন, তাহলে আপনার উপর সুদ ও অতিরিক্ত চার্জের বোঝা বাড়বে।

৪. ক্রেডিট রেকর্ডের প্রভাব

লোন পরিশোধ না করলে আপনার ক্রেডিট রেকর্ড নষ্ট হতে পারে, যা ভবিষ্যতে অন্যান্য ব্যাংকিং সেবার ক্ষেত্রে সমস্যা তৈরি করবে। আপনার ঋণগ্রহণের ইতিহাস বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে চলে যাবে।

৫. সুদ এবং চার্জ সম্পর্কে সচেতন থাকুন

বিকাশ লোনের ক্ষেত্রে শতকরা ৯% সুদ প্রযোজ্য হয়। তাই, লোনের আসল টাকা ছাড়াও সুদের অতিরিক্ত টাকা ফেরত দিতে হবে। অন্য কোনো লুকানো চার্জ বা ফি রয়েছে কিনা, সেটাও নিশ্চিত করুন।

৬. লোনের সময়সীমা ও পরিশোধ পদ্ধতি

বিকাশ লোন সাধারণত ৩ থেকে ৬ মাসের মধ্যে পরিশোধ করতে হয়। সময়সীমা মেনে টাকা ফেরত দেওয়ার পরিকল্পনা আগেই করে নিন। বিকাশ অ্যাপ থেকেই টাকা পরিশোধের সুবিধা থাকলেও, সময়মতো পরিশোধ না করলে অতিরিক্ত জরিমানা গুনতে হতে পারে।

৭. আইনগত প্রভাব

লোন পরিশোধ করতে ব্যর্থ হলে বিকাশ ও সিটি ব্যাংক আপনার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে পারে। ফলে আপনার ব্যাংকিং রেকর্ড খারাপ হতে পারে এবং ভবিষ্যতে লোন পাওয়া কঠিন হয়ে দাঁড়াবে।

৮. জরুরি প্রয়োজন ছাড়া লোন নিবেন না

বিকাশ লোন কেবলমাত্র জরুরি অবস্থায় নেওয়ার কথা ভাবুন। অহেতুক বা অপ্রয়োজনীয় কারণে লোন নিলে আর্থিক সমস্যা সৃষ্টি হতে পারে।

৯. বিকল্প উৎস খুঁজে দেখুন

বিকাশ লোন ছাড়াও অন্যান্য সল্প সুদে লোন পাওয়ার বিকল্প আছে কিনা তা খুঁজে দেখুন। বিকাশের লোন তুলনামূলকভাবে বেশি সুদযুক্ত হতে পারে।

এগুলো মাথায় রেখে সঠিক সিদ্ধান্ত নিন এবং নিশ্চিত করুন যে, আপনি যেকোনো লোন নেওয়ার আগে ভালোভাবে চিন্তা করেছেন।

১০ মিনিটে লোন পাওয়ার উপায়

বিকাশে লোন পাওয়ার প্রক্রিয়া খুবই সহজ এবং দ্রুত। ১০ মিনিটের মধ্যে লোন পাওয়ার জন্য নিচের ধাপগুলো অনুসরণ করুন:

বিকাশ অ্যাপ ডাউনলোড করুনঃ যদি এখনও আপনার ফোনে বিকাশ অ্যাপ না থাকে, তাহলে প্লে স্টোর বা অ্যাপ স্টোর থেকে অ্যাপটি ডাউনলোড করুন এবং ইনস্টল করুন।

অ্যাকাউন্টে লগ ইন করুনঃ আপনার বিকাশ অ্যাকাউন্টে মোবাইল নম্বর এবং পাসওয়ার্ড দিয়ে লগ ইন করুন।

লোন সেকশন খুঁজুনঃ অ্যাপের মূল মেনুতে গিয়ে 'লোন' সেকশন নির্বাচন করুন। এখানে আপনার ঋণ পাওয়ার তথ্য এবং লোনের পরিমাণ দেখাবে।

লোনের পরিমাণ নির্বাচন করুনঃ আপনি কত টাকা লোন নিতে চান, সেটি নির্বাচন করুন। সাধারণত ৫০০ টাকা থেকে ২০,০০০ টাকা পর্যন্ত লোন পাওয়া যায়।

আবেদন করুনঃ লোনের পরিমাণ নির্বাচন করার পর, আবেদন করার জন্য নির্দেশাবলী অনুসরণ করুন।

তথ্য যাচাই করুনঃ আপনার তথ্য এবং লোনের শর্তাবলী যাচাই করুন। প্রয়োজন হলে প্রয়োজনীয় তথ্য আপডেট করুন।

লোন গ্রহণ করুনঃ সব তথ্য সঠিক হলে 'অ্যাপ্লাই' বা 'লোন গ্রহণ করুন' বাটনে ক্লিক করুন। আপনার আবেদন পর্যালোচনা করে তৎক্ষণাত লোন অনুমোদন হবে।

পেমেন্ট কনফার্মেশনঃলোন অনুমোদনের পর, টাকা আপনার বিকাশ অ্যাকাউন্টে চলে আসবে। আপনি একটি কনফার্মেশন মেসেজও পাবেন।

পরিশোধের পরিকল্পনা করুনঃ লোন পাওয়ার পর, পরবর্তী ৩ থেকে ৬ মাসের মধ্যে তা পরিশোধের পরিকল্পনা করুন।

প্রয়োজনে সাহায্য নিনঃ যদি কোনো সমস্যা হয়, তাহলে বিকাশ কাস্টমার কেয়ারে যোগাযোগ করুন।

এই ধাপগুলো অনুসরণ করে আপনি খুব সহজেই ১০ মিনিটের মধ্যে বিকাশে লোন পেতে পারেন।

লেখকের শেষকথাঃ বিকাশ থেকে লোন নেওয়ার উপায়

আজকের এই আর্টিকেলের মাধ্যমে আমি আপনাদের বিকাশ থেকে লোন নেওয়ার উপায় এবং বিকাশ লোন পরিশোধ করার নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করেছি। আশা করছি, এই আর্টিকেলটি আপনাদের উপকারে এসেছে । যদি কোনো অংশ বুঝতে অসুবিধা হয়, তাহলে কমেন্টের মাধ্যমে জানাতে পারেন, আমি চেষ্টা করব আপনাকে সাহায্য করার।

আপনার যদি এই আর্টিকেলটি থেকে সামান্যও উপকার হয়ে থাকে, তাহলে এটি আপনার বন্ধুদের এবং প্রিয়জনদের সঙ্গে শেয়ার করতে ভুলবেন না। তাদেরও এই বিষয়গুলো জানা জরুরি। নতুন এবং কার্যকরী টিপস এবং আর্টিকেল পেতে নিয়মিত আমার ওয়েবসাইটটি ভিজিট করতে পারেন। আপনারা যদি আমাকে ব্যক্তিগতভাবে সাপোর্ট করেন, তাহলে আমি আরো নতুন নতুন বিষয় নিয়ে আপনার সামনে আসতে পারব, যা আপনার দৈনন্দিন জীবনে কাজে লাগবে।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

মাইতানহিয়াত আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url