টাইগার মুরগি - টাইগার মুরগির ভ্যাকসিন তালিকা জেনে নিন

 প্রিয় পাঠকগণ, আপনারা অনেকে টাইগার মুরগি - টাইগার মুরগির ভ্যাকসিন তালিকা সম্পর্কে জানতে চান। আজকে আমি সেই সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করবো এই আর্টিকেলটিতে। আশা করি আমার সাথেই থাকবেন।

এই আর্টিকেলটি পড়লে আপনারা টাইগার মুরগি সম্পর্কে যাবতীয় তথ্য পাবেন। তাছাড়া আপনারা আরো জানতে পারবেন টাইগার মুরগির ভ্যাকসিন তালিকা, টাইগার মুরগির খাবার তালিকা, টাইগার মুরগি পালন পদ্ধতি, টাইগার মুরগি কত দিনে ডিম পাড়ে। 

পোষ্ট সূচীপত্রঃ টাইগার মুরগি - টাইগার মুরগির ভ্যাকসিন তালিকা

টাইগার মুরগি 

টাইগার মুরগি বর্তমানে আমাদের দেশের একটি জনপ্রিয় মুরগির জাত হিসেবে খ্যাতি অর্জন করেছে। এর কারণ শুধু এর বড় আকৃতি ও বেশি মাংস উৎপাদন নয়, বরং এর মাংসের বিশেষ স্বাদ এবং দ্রুত বৃদ্ধির ক্ষমতা। আমাদের দেশে অনেক কৃষকই এখন টাইগার মুরগি পালন করে সফলতা অর্জন করছেন। এই মুরগির চাহিদা দিন দিন বাড়ছে, কারণ এটি কেবল খামারিদের জন্য নয়, ভোক্তাদের জন্যও লাভজনক।

টাইগার মুরগি অন্যান্য মুরগির তুলনায় বেশ আলাদা। এর প্রধান বৈশিষ্ট্য হলো এর ওজন অনেক দ্রুত বৃদ্ধি পায়, যা খামারিদের জন্য আকর্ষণীয়। এর মাংসের স্বাদ অন্য যেকোনো মুরগির মাংস থেকে আলাদা এবং সুস্বাদু, তাই অনেকেই খেতে পছন্দ করেন। সাধারণত গ্রিল বা মাংস রান্নায় এটি খুবই উপযোগী এবং বাজারে এর মূল্যও বেশ ভালো।

যারা নতুন খামারি, তারা টাইগার মুরগির বাচ্চা কিনে ব্যবসা শুরু করার জন্য অনেক আগ্রহী। কারণ এই মুরগি পালনে তুলনামূলকভাবে কম সময়ে ভালো লাভ পাওয়া যায়। তবে প্রথমে বাচ্চার দাম সম্পর্কে ধারণা রাখা গুরুত্বপূর্ণ। সঠিকভাবে পরিকল্পনা করে এবং বাজার বিশ্লেষণ করে খামার শুরু করলে টাইগার মুরগির ব্যবসা থেকে সফলতা পাওয়া সম্ভব।

এটি একসময় শুধুমাত্র বড় বড় খামারিদের জন্য সীমাবদ্ধ ছিল, কিন্তু বর্তমানে এর সহজলভ্যতা এবং ভালো উৎপাদনক্ষমতার কারণে ছোট খামারিরাও টাইগার মুরগি পালন করে সফল হচ্ছেন।

টাইগার মুরগির ভ্যাকসিন তালিকা

টাইগার মুরগি পালন করতে গেলে সঠিক সময়ে এবং সঠিকভাবে ভ্যাকসিন দেয়া অত্যন্ত জরুরি। এর ফলে মুরগির রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায় এবং খামারিরা উচ্চমানের মাংস ও ডিম উৎপাদন করতে পারেন। সঠিক ভ্যাকসিনেশন মুরগির স্বাস্থ্য নিশ্চিত করে এবং লাভজনক ব্যবসা গড়ে তোলার পথে সহায়ক হয়। নিচে টাইগার মুরগির জন্য প্রয়োজনীয় ভ্যাকসিনগুলির একটি তালিকা প্রদান করা হলোঃ

বয়স রোগের নাম ভ্যাকসিনের নাম প্রয়োগ পদ্ধতি
১-৩ দিন রাণীক্ষেত+ ব্রংকাইটিস আইবি+ এনডি চোখে ফোঁটা
১১-১২ দিন গামবোরো আই বি ডি ফুখে ফোঁটা
১৭-১৮ দিন গামবোরো আই বি ডি খাবার পানিতে
১৯-২৩ দিন রাণীক্ষেত ল্যাসোটা চোখে ড্রপ
২৪-২৮ দিন এভিয়ান ইনফ্লুয়েঞ্জা ( বার্ড ফ্লু ) এভিয়ান ইনফ্লুয়েঞ্জা ( H5N1 চামড়ার নিচে ইনজেকশন
৩০-৩৫ দিন ফাউল পক্স ফাউল পক্স ডানায়সূচ ফুটানো
৬-৭ সপ্তাহ রাণীক্ষেত এনডি ঘাড়ের চামড়ার নিচে ইনজেকশন
৮ সপ্তাহ ফাউল কলেরা ফাউল কলেরা নির্দেশনা মোতাবেক
৯ সপ্তাহ ইনফেকশাস করাইজা, সালমোনেলা করাইজা + সালমোনেলা
১২ সপ্তাহ ফাউল কলেরা ফাউল কলেরা নির্দেশনা মোতাবেক
১৫-১৬ সপ্তাহ এভিয়ান ইনফ্লুয়েঞ্জা (বার্ড ফ্লু) এভিয়ান ইনফ্লুয়েঞ্জা (H5N1) চামড়ার নিচে ইনজেকশন
১৬ সপ্তাহ করাইজা, সালমোনেলা, রাণীক্ষেত, ব্রংকাইটিস জি + এনডি +আইবি নির্দেশনা মোতাবেক

টাইগার মুরগির খাবার তালিকা

আমরা এখন টাইগার মুরগির খাদ্য পরিকল্পনার মূল পর্যায়ে পৌঁছে গেছি। টাইগার মুরগির সঠিক বৃদ্ধি ও স্বাস্থ্য নিশ্চিত করতে খাবারের পরিমাণ এবং সঠিক সময়ে খাবার দেয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। চলুন দেখে নেওয়া যাক টাইগার মুরগির জন্য প্রতিদিনের খাবারের পরিমাণ কেমন হওয়া উচিত:

প্রথম দিন: টাইগার মুরগির বাচ্চার জন্মের পর, সাধারণত তাদের ওজন হবে ৪৫ থেকে ৫০ গ্রাম। এ দিনে খাবারের পরিমাণ শূন্য হলেও, প্রথম দিনে বাচ্চার ওজন হবে প্রায় ৫৭ গ্রাম। তাই, তাদের দৈনিক খাদ্য গ্রহণের পরিমাণ হবে ১৪ গ্রাম।

দ্বিতীয় দিন: বাচ্চার ওজন এই দিন ৭২ গ্রাম হবে এবং খাবারের পরিমাণ ৩০ গ্রাম হবে। এখানে খাবারের পরিমাণ বাড়ানোর সাথে সাথে বাচ্চার বৃদ্ধি বাড়তে থাকবে।

তৃতীয় দিন: মুরগির বাচ্চার ওজন ৮৯ গ্রাম হবে, এবং খাদ্য গ্রহণের পরিমাণ হবে ৫১ গ্রাম। এই দিন খাদ্য গ্রহণের পরিমাণ বৃদ্ধির হার প্রতি দিন ১৭% হিসেবে হবে।

চতুর্থ দিন: মুরগির ওজন বাড়বে ১১০ গ্রাম, এবং খাবারের পরিমাণ হবে ৭৫ গ্রাম। খাদ্য গ্রহণের পরিমাণ দৈনিক গড় বৃদ্ধি ২০ গ্রাম হবে।

পঞ্চম দিন: বাচ্চার ওজন হবে ১৩২ গ্রাম, এবং খাবারের পরিমাণ ১০৫ গ্রাম হবে। খাদ্য বৃদ্ধির হার প্রতি দিন ২৫ গ্রাম হিসেবে থাকবে।

আরো পড়ুনঃ ডেঙ্গু জ্বরের লক্ষণ ও ডেঙ্গু জ্বর প্রতিরোধে করণীয়

ষষ্ঠ দিন: মুরগির বাচ্চার ওজন হবে ১৬০ গ্রাম। খাদ্যের পরিমাণ বাড়িয়ে ১৩৫ গ্রাম করা হবে। খাদ্য বৃদ্ধির হার প্রতি দিন ৩০ গ্রাম হবে।

সপ্তম দিন: মুরগির বাচ্চার ওজন ১৮৫ গ্রাম হবে এবং খাবারের পরিমাণ ১৬৭ গ্রাম হবে। এই দিন খাদ্য গ্রহণের পরিমাণ বাড়বে, কারণ বাচ্চার বৃদ্ধি ত্বরান্বিত হবে।

উপরের খাদ্য তালিকা অনুসরণ করে, আপনি আপনার টাইগার মুরগির বাচ্চাদের সঠিকভাবে পুষ্টি দিতে পারবেন এবং তাদের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে পারবেন। যেকোনো খাবার দেওয়ার আগে অবশ্যই একজন অভিজ্ঞ কৃষি অধিদপ্তর অথবা মুরগি পালন বিশেষজ্ঞের সঙ্গে পরামর্শ করুন। আশাকরি, এই খাদ্য তালিকা আপনাদের জন্য সহায়ক হবে।

টাইগার মুরগি পালন পদ্ধতি 

 আপনি কি টাইগার মুরগি পালন শুরু করতে আগ্রহী? তাহলে আপনি সঠিক জায়গায় এসেছেন! এই বিস্তারিত গাইডে, আমরা আপনাকে টাইগার মুরগি পালনের সমস্ত গুরুত্বপূর্ণ দিক সম্পর্কে জানাব। সঠিক প্রজাতি নির্বাচন থেকে শুরু করে মুরগির যত্ন, সব কিছুতেই সাহায্য করতে আমরা এখানে আছি। তাই এক কাপ চা নিয়ে বসুন এবং চলুন টাইগার মুরগি পালনের fascinating জগতে প্রবেশ করি!

সঠিক টাইগার মুরগির প্রজাতি নির্বাচন ঃ টাইগার মুরগি পালন করার প্রথম এবং গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হলো সঠিক প্রজাতি নির্বাচন। বাজারে বিভিন্ন টাইগার মুরগির প্রজাতি পাওয়া যায়, যেমন বেঙ্গল টাইগার মুরগি, সাইবেরিয়ান টাইগার মুরগি এবং সুমাত্রান টাইগার মুরগি। সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে, জলবায়ু, উপলব্ধ স্থান এবং আপনার ফার্মের উদ্দেশ্য (ডিম বা মাংস) বিবেচনা করে সঠিক প্রজাতি নির্বাচন করুন।

আপনার টাইগার মুরগি ফার্ম স্থাপনঃ  সঠিক প্রজাতি নির্বাচন করার পর, আপনার ফার্ম স্থাপন শুরু করুন। একটি শক্তিশালী কূপ তৈরি করুন যা আপনার মুরগিদের বসার, ডিম দেওয়া এবং সাচ্ছন্দ্যে চলাফেরা করার জন্য পর্যাপ্ত স্থান দেয়। কূপটি ভালোভাবে বায়ু চলাচলযুক্ত এবং শিকারি থেকে সুরক্ষিত হওয়া উচিত, এবং এতে নেস্টিং বক্স ও পার্চ থাকতে হবে। এছাড়া, মানসম্পন্ন ফিডার ও ওয়াটারার কিনে নিন যাতে মুরগিরা সব সময় তাজা খাবার ও পানির পায়।

আপনার টাইগার মুরগির যত্নঃ  মুরগির স্বাস্থ্য ও সুস্থতার জন্য সঠিক যত্ন ও ব্যবস্থাপনা অপরিহার্য। তাদের একটি সুষম খাদ্য দিন যা তাদের পুষ্টির প্রয়োজনীয়তা পূরণ করে, যেমন বিভিন্ন ধরনের দানা, সবজি ও প্রোটিন। মুরগিগুলোকে পরিষ্কার ও শুষ্ক রাখুন যাতে রোগ ও পরজীবী প্রতিরোধ করা যায়, এবং নিয়মিতভাবে অসুস্থতা বা সমস্যার লক্ষণ দেখতে থাকুন। মুরগিরা পর্যাপ্ত স্থান পেলে তারা সুস্থ ও খুশি থাকবে, তাই তাদের চলাফেরার জন্য পর্যাপ্ত স্থান দিন।

প্রজনন এবং প্রজননঃ যদি আপনি আপনার টাইগার মুরগির সংখ্যা বাড়াতে চান, তাহলে প্রজনন একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক। নিশ্চিত করুন যে আপনার প্রজনন জোড়া সুস্থ এবং ভালোভাবে মিলিত হয়েছে যাতে শক্তিশালী বাচ্চা উৎপাদিত হয়। প্রজননের জন্য উপযুক্ত পরিবেশ নিশ্চিত করুন, যেখানে পর্যাপ্ত নেস্টিং সাইট ও প্রাইভেসি থাকবে। প্রজনন মৌসুমে মুরগিগুলোকে নজর রাখুন এবং প্রয়োজন হলে হস্তক্ষেপ করুন যাতে সফল প্রজনন নিশ্চিত হয়।

 শেষে, টাইগার মুরগি পালন একটি পুরস্কৃত ও সন্তোষজনক উদ্যোগ হতে পারে, যদি আপনি সময় ও পরিশ্রম দেন। সঠিক প্রজাতি নির্বাচন, একটি সঠিক ফার্ম স্থাপন এবং মুরগির প্রতি ভালো যত্ন দিয়ে আপনি একটি সফল টাইগার মুরগি ব্যবসা গড়ে তুলতে পারেন। তাই, হাত গুটিয়ে কাজ শুরু করুন এবং টাইগার মুরগি পালনের রোমাঞ্চকর যাত্রায় প্রবেশ করুন!

টাইগার মুরগি কত টাকা কেজি

যারা টাইগার মুরগির মাংস খেতে ভালোবাসেন, তারা নিশ্চয়ই জানতে চান টাইগার মুরগির মাংসের দাম কত। আসুন, এই বিষয়ে বিস্তারিত জানার চেষ্টা করি।

টাইগার মুরগির মাংসের দাম বিভিন্ন ফ্যাক্টরের উপর নির্ভর করে পরিবর্তিত হতে পারে। সাধারণত, টাইগার মুরগির ওজন ৬ থেকে ৮ কেজি পর্যন্ত হয়ে থাকে, তবে বিশেষ কিছু ক্ষেত্রে এটি ১০ থেকে ১৫ কেজি পর্যন্তও হতে পারে। এর দ্রুত বৃদ্ধি এবং অধিক ওজনের কারণে এটি মাংসের জন্য বিশেষভাবে জনপ্রিয়।

দাম এবং বিবরণ

  • মাংসের দাম: বর্তমানে, টাইগার মুরগির মাংসের দাম প্রতি কেজি ২৫০ থেকে ২৭০ টাকার মধ্যে হতে পারে। তবে, কিছু ক্ষেত্রে দাম ১৫০ থেকে ২০০ টাকার মধ্যেও পাওয়া যেতে পারে।
  • বাচ্চার দাম: যদি আপনি টাইগার মুরগির বাচ্চা কিনতে চান, তবে তার দাম প্রতি পিস ৬০ থেকে ৭০ টাকা পর্যন্ত হতে পারে।

দাম পরিবর্তিত হওয়ার অনেক কারণ থাকতে পারে, যেমন মুরগির অভ্যন্তরীণ উৎপাদন খরচ, বাজারের চাহিদা এবং সরবরাহের পরিমাণ। কিছু ফার্মের দাম সাধারণ বাজারের তুলনায় কিছুটা বেশি হতে পারে।

আরো পড়ুনঃ মুসলিম ছেলেদের আধুনিক নাম - ইসলামিক নাম অর্থসহ জেনে নিন

আপনি চাইলে টাইগার মুরগির বাচ্চা কিনে বাড়িতে পালন করে বড় করে নিতে পারেন, যা পরে মাংসের জন্য ব্যবহার করা যেতে পারে। এইভাবে আপনি নিজেই মুরগির স্বাস্থ্য এবং মাংসের গুণগত মান নিশ্চিত করতে পারবেন।

টাইগার মুরগি চেনার উপায়

টাইগার মুরগি পালন করে লাভবান হতে চান? প্রথমেই জানুন, টাইগার মুরগি অন্যান্য সাধারণ মুরগির তুলনায় কতটা বিশেষ। অনেক খামারি আছেন যারা টাইগার মুরগি চিনেন না এবং তাই এই মুরগি পালনের সুবিধা থেকে বঞ্চিত হন। টাইগার মুরগির রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা অনেক বেশি এবং ডিম ও মাংসে এটি সাধারণ মুরগির থেকে অনেক উন্নত। চলুন, টাইগার মুরগি চিনতে কী কী লক্ষণ অনুসরণ করবেন, তা জেনে নেয়া যাক।

টাইগার মুরগি চেনার উপায়

  1. শরীরের গঠন: টাইগার মুরগি সাধারণ মুরগির তুলনায় মোটাসোটা এবং এতে বেশি মাংস থাকে। দেখতে আকর্ষণীয় এবং একটু বড়সড় হয়ে থাকে।

  2. পায়ের মোটা ভাব: টাইগার মুরগির পা সাধারণ মুরগির তুলনায় অনেক মোটা এবং শক্তিশালী। এই বৈশিষ্ট্যটি সহজেই শনাক্ত করা যায়।

  3. গোলাকার বডি: টাইগার মুরগির শরীরের আকৃতি কিছুটা গোলাকার। এটি অন্যান্য মুরগির তুলনায় ভিন্ন এবং চোখে পড়ার মতো।

  4. ওজন: টাইগার মুরগির ওজন সাধারণ মুরগির তুলনায় অনেক বেশি হয়ে থাকে। এটি মুরগির মোট আকারে পরিবর্তন আনে।

  5. রঙ: টাইগার মুরগির লাল রঙ কিছুটা হালকা হতে পারে। এর বিশেষ রঙ এবং উজ্জ্বলতা এটিকে সহজেই আলাদা করে তোলে।

উপরের পয়েন্টগুলো আপনাকে টাইগার মুরগি চেনাতে সাহায্য করবে এবং এই মুরগির বিশেষ বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে ধারণা দেবে। যদি আপনি টাইগার মুরগি পালনে আগ্রহী হন, তাহলে এই বৈশিষ্ট্যগুলো লক্ষ্য করে নিশ্চিত হতে পারবেন যে আপনার খামারে সঠিক টাইগার মুরগি রয়েছে।

টাইগার মুরগির বাচ্চার দাম

আপনারা যদি টাইগার মুরগি পালন করে ব্যবসা করতে চান, তবে প্রথমে আপনাকে টাইগার মুরগির বাচ্চার দাম জানতে হবে। টাইগার মুরগির বাচ্চা কেনার জন্য সঠিক দামের ধারণা থাকলে, আপনি সহজেই বাজেটে ফিট করার মতো বাচ্চা নির্বাচন করতে পারবেন। আসুন, টাইগার মুরগির বাচ্চার দাম নিয়ে বিস্তারিত জানি।

টাইগার মুরগির বাচ্চার দাম

টাইগার মুরগির বাচ্চার দাম বিভিন্ন বয়সের উপর নির্ভর করে। সাধারণভাবে, একদিন বয়সী টাইগার মুরগির বাচ্চার দাম প্রায় ৩০ থেকে ৪০ টাকা হয়ে থাকে। যদি আপনি ৮ থেকে ১০ দিনের বয়সী বাচ্চা কিনতে চান, তবে তার দাম হবে ৫০ থেকে ৬০ টাকা। আর যদি তিন সপ্তাহ বয়সী বাচ্চা কিনতে চান, তাহলে তার দাম প্রায় ৯০ থেকে ১০০ টাকা হতে পারে।

আরো পড়ুনঃ ডিসেম্বর মাসের ছুটির তালিকা ও দিবস ২০২৪ সম্পর্কে জেনে নিন 

এছাড়া, বাজারে টাইগার মুরগির বাচ্চার দাম সাধারণত ৪০ থেকে ৫০ টাকার মধ্যে থাকে। তবে, দাম বাজারের চাহিদা এবং সরবরাহ অনুযায়ী ওঠা-নামা করতে পারে। তাই, সর্বদা বাজারের বর্তমান পরিস্থিতি সম্পর্কে ধারণা রাখা ভাল।

নির্বাচনের পরামর্শ

টাইগার মুরগির বাচ্চা কেনার আগে তাদের স্বাস্থ্য এবং পুষ্টি নিশ্চিত করা জরুরি। কেনার আগে খামার বা বিক্রেতার কাছে ভাল করে যাচাই করুন যেন আপনি সুস্থ ও শক্তিশালী বাচ্চা পান।

এই দামের ধারণাগুলো আপনাকে সঠিকভাবে টাইগার মুরগির বাচ্চা কেনার সিদ্ধান্ত নিতে সাহায্য করবে। আশা করি, আপনি সহজেই আপনার ব্যবসার জন্য উপযুক্ত বাচ্চা নির্বাচন করতে পারবেন।

টাইগার মুরগির ছবি











টাইগার মুরগির ঔষধের তালিকা এবং প্রয়োগ বিধি

প্রিয় কৃষক ভাইয়েরা, আপনারা যদি টাইগার মুরগির বাচ্চা উৎপাদন করতে চান, তাহলে মুরগির সুস্থতা বজায় রাখতে এবং ভালো ফলাফল অর্জন করতে কিছু গুরুত্বপূর্ণ নিয়ম মেনে চলতে হবে। সঠিক ওষুধ ব্যবহারের মাধ্যমে আপনি আপনার টাইগার মুরগির বাচ্চাদের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে পারবেন। চলুন, টাইগার মুরগির ঔষধের তালিকা ও তাদের প্রয়োগ বিধি বিস্তারিতভাবে জেনে নেওয়া যাক।

বয়স দিন ঔষধের নাম
১ম দিন লাইসোভিট বা গ্লুকোজ
টানা ২-৪ দিন এমক্সাসিলিন
৩-৫ দিনের ভিতর আইবি+এনডি লাইভ ভ্যাক্সিন (রানীক্ষেত ও ব্রংকাইটিস)
১০-১২ দিনের ভিতর গামবোরো লাইভ ভ্যাক্সিন
১২-১৪ দিন লিভারটনিক ও ভিটামিন
১৮-২২ দিনের ভিতর গামবোরো লাইভ ভ্যাক্সিন
২৪-২৬ দিনের ভিতর এনডি লাইভ ভ্যাক্সিন (রানীক্ষেত)
২৪-২৬ দিন এম্প্রোলিয়াম + সিপ্রো
৩০ তম দিন ফাউলপক্স ভ্যাক্সিন।
৩৫ তম দিন কৃমিনাষক ঔষধ।
৪৫-৪৮ দিনের ভিতর রানীক্ষেত লাইভ ভ্যাক্সিন (প্রাদুর্ভাব বেশি থাকলে)
৫০ দিন থেকে নিয়মিত প্রোবায়োটিক + ভিটামিন + লিভারটনিক

টাইগার মুরগি কত দিনে ডিম পাড়ে

যারা টাইগার মুরগি পালন করতে আগ্রহী, তাদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন হচ্ছে টাইগার মুরগি কত মাস বয়সে ডিম পাড়ে। টাইগার মুরগির ডিম পাড়ার সময় সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য নিচে দেওয়া হলো:

টাইগার মুরগি কত মাস বয়সে ডিম পাড়ে

টাইগার মুরগি সাধারণত ১৮ সপ্তাহ বা সাড়ে চার মাস বয়সে প্রথম ডিম পাড়তে শুরু করে। এটি একটি সাধারণ সময়কাল, তবে কিছু মুরগি এই বয়সের আগে বা পরে ডিম পাড়তে পারে।

ডিম দেওয়ার পরিমাণ

প্রথম বছর: একটি সুস্থ টাইগার মুরগি বছরে প্রায় ১৫০ থেকে ২০০ টি ডিম দেয়।
বয়স বৃদ্ধি: টাইগার মুরগি সাধারণত দু'বছর থেকে আড়াই বছর পর্যন্ত ভালোভাবে ডিম দিয়ে থাকে। 
এর পরে ডিম দেওয়ার পরিমাণ ধীরে ধীরে কমে যায়।টাইগার মুরগি পালনে যদি সঠিক খাবার, পরিচর্যা, এবং সুস্থ পরিবেশ নিশ্চিত করা হয়, তবে তারা নিয়মিত এবং স্বাস্থ্যবান ডিম উৎপাদন করবে।

লেখকের শেষকথাঃ টাইগার মুরগি - টাইগার মুরগির ভ্যাকসিন তালিকা

প্রিয় পাঠকবৃন্দ, আশা করছি, আপনি এখানে টাইগার মুরগি ও টাইগার মুরগির ভ্যাকসিন তালিকা ও খাবার তালিকা সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানাতে সক্ষম হয়েছেন। টাইগার মুরগি পালন করার জন্য সঠিকভাবে খাবার দেওয়া এবং নিয়মিত ভ্যাকসিন প্রদান অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

আরো পড়ুনঃ সরকারি ছুটির তালিকা সহ ২০২৫ সালের ক্যালেন্ডার

টাইগার মুরগি পালন করে সফলতা অর্জন করতে হলে, এই সব বিষয় মেনে চলা অপরিহার্য। আপনার অভিজ্ঞতা অন্যদের সাথে শেয়ার করতে এবং টাইগার মুরগি পালন সম্পর্কে তাদের উৎসাহিত করতে আমাদের পোস্টটি শেয়ার করুন। আশা করছি, আপনি টাইগার মুরগি পালন করে ভালো লাভবান হবেন।

ধন্যবাদ!

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

মাইতানহিয়াত আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url